এই ব্লগটি সন্ধান করুন

রবিবার, ৩১ আগস্ট, ২০১৪

চুলের প্রতি এই টাক থেকে মুক্তি পেতে চাইলে।

ছেলেরা বরাবরই শরীরের যত্নের ব্যাপারে উদাসীন। সেই সাথে চুল ও ত্বকের ব্যাপারেও। সপ্তাহে ১ টি দিনও তেল দেয়া কিংবা শ্যাম্পু করা হয়ে ওঠে না অনেকেরই। কিন্তু এতে করে মাথার ত্বক এবং চুলের ফলিকলের অনেক ক্ষতি হয়। যার ফলে চুল পড়া শুরু হয় যা শেষ পর্যায়ে টাকে গড়ায়। তাই ছেলেদের কিছু যত্ন নেয়া উচিৎ চুলের প্রতি এই টাক থেকে মুক্তি পেতে চাইলে। চলুন তবে দেখে নেয়া যাক কম সময়ে টাকের সমস্যা থেকে মুক্তি ও নতুন চুল গজানোর কিছু টিপস।
অলিভ অয়েল, মধু ও দারুচিনির হেয়ার মাস্ক

চুলের ঘনত্ব ও দৈর্ঘ্য অনুযায়ী অলিভ অয়েল গরম করে নিন। এরপর এতে ১-২ চা চামচ মধু এবং ১ চা চামচ দারুচিনি গুঁড়ো দিয়ে খুব ভালো করে মিশিয়ে নিন। এই হেয়ার মাস্ক চুলের গোঁড়ায় মাথার ত্বকে ভালো করে লাগান। ১৫-২০ মিনিট চুলে রাখুন। এরপর শ্যাম্পু করে চুল ধুয়ে ফেলুন। এতে চুলের গোঁড়া মজবুত হবে এবং টাক পড়ার সম্ভাবনা একেবারেই কমে যাবে।
মেহেদী এবং সরিষার তেলের হেয়ার মাস্ক

এই মাস্কটি তৈরি করতে লাগবে মেহেদী পাতা ১০০ গ্রাম এবং সরিষার তেল ২৫০ গ্রাম। একটি প্যানে সরিষার তেল ঢেলে গরম হতে দিন। এরপর এতে মেহেদী পাতাগুলো দিয়ে ভালো করে ফুটিয়ে নিন। ৫-৭ মিনিট ফুটিয়ে চুলা থেকে নামিয়ে তেল ঠাণ্ডা হতে দিন। মেহেদী পাতা ছেঁকে নিয়ে এই তেল চুলের গোঁড়ায়, মাথার ত্বকে ভালো করে লাগান। ১ ঘণ্টা বাদে চুল শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন। বেঁচে যাওয়া বাকি তেলটুকু বোতলে ভরে রেখে দিন। এই মাস্কটি প্রতিদিন ব্যবহারে ভালো ফল পাবেন।
জবা ফুল ও লেবুর রসের হেয়ার মাস্ক

১ গ্লাস পানি একটি পাত্রে নিয়ে ফুটতে দিন। পানি ফুটে উঠলে এতে ২ টি জবাফুল দিয়ে ৩/৪ মিনিট আরও ফুটিয়ে নিন। এরপর পানি ঠাণ্ডা হতে দিন। পানি ঠাণ্ডা হয়ে এলে ছেঁকে নিয়ে এতে কএয়ক ফোঁটা লেবুর রস দিয়ে মিশিয়ে নিন। চুল শ্যাম্পু করে ধোয়ার পর এই মিশ্রণটি যেখানে টাক পড়া শুরু করেছে সেখানে লাগিয়ে রাখুন। জবা ফুলের রস নতুন চুল গজাতে সাহায্য করবে।
নিমপাতার ব্যবহার

৩/৪ গ্লাস পানি নিয়ে এতে ১০/১২ টি নিম পাতা ফুটতে দিন। পানি ফুটে অর্ধেক হয়ে এলে চুলা থেকে নামিয়ে ছেঁকে নিন। এই পানি ঠাণ্ডা হলে চুল ধোয়ার কাজে ব্যবহার করুন। সপ্তাহে দুবার ব্যবহারে ভালো ফল পাবেন। - See more at: http://sangbad24.net/single.php?id=11969#sthash.FRWv34nH.dpuf

বুধবার, ২৭ আগস্ট, ২০১৪

নষ্ট মেমরি ঠিক করার উপায়!

নষ্ট মেমরি ঠিক করার উপায়!
বর্তমান তথ্যপ্রযুক্তির যুগে মেমরি কার্ড একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। এটার মধ্যে আপনি রাখতে পারেন গুরুত্বপূর্ণ সব ডাটা। এছাড়াও জীবনের সৃত্মি চিহ্নিত কিছু ছবি আমরা আমদের মোবাইলের মেমরি কার্ডের মধ্যেই রাখি। তথ্য আদান প্রদান করার সময় ফোনের মেমোরি কার্ড হঠাৎ.খুলে নেওয়া হলে বা কোনো ভাবে সংযোগ বিছিন্ন হলে সেটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে অকেজো হয়ে যায়। ফলে আপনি পরেন মহাবিপাকে। অবশেষে আপনার প্রয়োজনীয় কিছু ডকুমেন্ট হারিয়ে আপনি হতাশায় ভোগেন। নানান ভাবে এমন অকেজো মেমোরি কার্ড সচল করা গেলেও সম্পূর্ণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত অথবা বাহ্যিকভাবে নষ্ট মেমরি কার্ডকে ঠিক করা কঠিন। তারপও আধুনিক কম্পউটারের যুগে সবই সম্ভব।
এবার আপনাদের জানাবো কিভাবে নষ্ট মেররি কার্ড ঠিক করবেন।
ডেটা রিকভারি সফটওয়্যার ব্যবহার করতে হবে:
মেমোরি কার্ডের তথ্য দেখা যাচ্ছে, কিন্তু সেটি ব্যবহার করা যাচ্ছে না। এ ক্ষেত্রে ডেটা উপস্থিত থাকে কিন্তু কম্পিউটার বা অন্য যন্ত্র সেটিকে পড়তে (রিড) পারে না। এক্ষেত্রে সবাই ভাবে যে মেমোরি কার্ডটি বোধহয় নষ্ট হয়ে গেছে। কিন্তু না, এমন অবস্থা থেকেরিকভারি সফটওয়্যার মেমোরি কার্ডটাকে ফিরিয়ে আনতে পারে।
আর এ জন্য যা করতে হবে আপনাকে:
প্রথমে কার্ড রিডারে মেমোরি কার্ড ঢুকিয়ে নিয়ে কম্পিউটারে সংযোগ দিন। খেয়াল রাখুন, মেমোরি কার্ড ফাইল এক্সপ্লোরারে বা হার্ড ড্রাইভের অন্যান্য ডিস্কের মতো দেখালে এটিতে প্রবেশ করা যাবে না, কিন্তু ফাইল সিস্টেম ঠিক আছে। এবার য়াপনার উইন্ডোজ এর স্টার্ট মেন্যুতে গিয়ে cmd লিখুন। এতে আপনার স্টার্ট মেন্যুর উপর দিকে কমান্ড প্রম্পট(cmd) দেখা যাবে। এখন এর ওপর ডান বোতাম চেপে Run administratorনির্বাচন করে সেটি খুলুন। কমান্ড
প্রম্পট চালু হলে এখানেchkdskmr লিখে enter ক্লিক করুন। এখানে m হচ্ছে মেমোরি কার্ডের ড্রাইভ ।
কম্পিউটারে কার্ডের ড্রাইভ লেটার যে টি দেখাবে সেটি এখানে লিখে চেক ডিস্কের কাজটি সম্পন্ন হতে দিন।
এখানেconvertlostchainsto filesবার্তা এলে y চাপুন। এ ক্ষেত্রে ফাইল কাঠামো ঠিক থাকলে কার্ডের তথ্য আবার ব্যবহার করা যাবে। মেমোরি কার্ড যদিinvalid file systemদেখায় তাহলে সেটির ড্রাইভের ডান ক্লিক করেFormat-এ ক্লিক করুন।File systemথেকেFATনির্বাচন করে Quick format-এর টিক চিহ্ন তুলে দিয়ে Format-এ ক্লিক করুন। ফরম্যাট সম্পন্ন হলে মেমোরি কার্ডের তথ্য হারালেও কার্ড নষ্ট হবে না।

রবিবার, ২৪ আগস্ট, ২০১৪

যে বিষয়গুলো দেখে পুরাতন আইফোন কিনবেন

যে বিষয়গুলো দেখে পুরাতন আইফোন কিনবেন


যে বিষয়গুলো দেখে পুরাতন আইফোন কিনবেন
বাংলাদেশের বাজারে সেকেন্ড হ্যান্ড আইফোন কেনাটা বিরাট ঝুকিঁর ব্যাপার। একটু সাবধান না হলে বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই আপনাকে অবধারিতভাবে ঠকতে হবে। কারন আপনাকে কোন ধরনের ওয়ারেন্টি দেয়া হবে না, কোন মানি ব্যাক গ্যরান্টি পাবেন না। মানে কেনার সময় যা দেখার দেখে নিবেন, পরে আর কোন আপত্তি গ্রহন করবে না কেউ অবশ্য বসুন্ধরার দোকানগুলোতে নাকি ৬ মাসের সার্ভিস ওয়ারেন্টি দেয়। তাই ওরা দামও বেশী রাখে।
ঢাকাতে বেশ কয়েকটা সংঘবদ্ধ চক্র আছে যারা শুধুমাত্র আইফোন চুরি করে অন্যত্র বিক্রি করে দেয়। সুতরাং সাবধান না থাকলে দেখা যাবে, কোন না কোন ফিচার কাজ করছে না বা আইফোন ক্লাউডে লকড। সবকিছু ঠিক থাকলেও দেখা যাবে ফোন চোরাই মাল। তখন মান সন্মান নিয়ে টানাটানি এমনকি কপালের ফেড়েঁ পড়ে জেলের ঘানিও টানতে হতে পারে। তাই ইন্টারনেট থেকে ঘাটাঁঘাটি করে আমার নিজের বানানো একটা চেক লিষ্ট দিলাম। আমার জানা মতে বাংলাতে, বিশেষ করে আমাদের দেশীয় প্রেক্ষাপট অনুযায়ী এই রকম লিষ্ট এর আগে কেউ দেয় নাই। অন্তত আমি গুগলে অনেক ঘেটেওঁ পাই নাই।
এই লিস্ট পুরোপুরিভাবে ফলো করতে পারলে ঠকার সম্ভবান নাই বল্লেই চলে। শুধু একটা সেফটিপিন আর ইন্টারনেট একটিভ আছে এমন একটি মাইক্রো সিম সাথে করে নিয়ে যাবেন। এই দুইটা জিনিস আইফোন চেক করতে কাজে লাগবে। আইফোন এর সাথে যদি বিক্রেতা ইয়ারফোন অফার না করে তবে একটা ইয়ারফোনও সাথে নিন। কিনতে যাবার আগে যে মডেলের আইফোন কিনতে চান সেটার ফিচার এবং স্পেসিফিকেশনের ব্যাপারে খানিকটা ধারনা নিয়ে তারপর যান। আর বিক্রেতাকে প্রথমেই জিগেস করবেন তার সিমে নেট একটিভ আছে কিনা। না থাকলে আপনার সিম ভেতরে ভরে কাজ শুরু করেন।
আইফোন
১) iCloud Accoucnt Delete: আইফোন হাতে নিয়েই আগে দেখবেন যে আইক্লাউডে লকড কিনা। ঠিকানা: [settings > iCloud > কোন একটা ইমেইল ঠিকানা যদি এখানে দেখেন তাহলে বুঝতে হবে সেট লকড। সুতরাং আইফোন বুঝে নেবার আগে অবশ্যই বিক্রেতাকে বলবেন আপনার সামনে এই একাউন্টটা ডিলিট করে দিতে। সবার নীচে ডিলিটের অপশন আছে। যদি এটা বলতে ভুলে যান বা বিক্রেতা কোন কারনে ডিলিট না করেই আপনাকে ফোন গছিয়ে দেয় তাহলে বুঝবেন এই ফোনের কারনে অনেক ভোগান্তি অপেক্ষা করছে আপনার জন্য।]
২. Erase all content & Settings: কেনার আগে এটা করতে পারলে তো সব চাইতে ভালো হয়। ঠিকানা: Settings > General > একদম সবার নীচে Reset > Erase all content & Settings.
৩. Find My iPhone is off: উপরের যে কোনর একটা করতে পারলে এটা অটোমেটিক অফ হয়ে যাবে। আলাদা করে আর অফ করতে হবে না। এই এ্যাপ দিয়ে ফোন ট্র্যাকিং করা হয়। সুতরাং চোরাই মাল হলে আর এটা অন থাকলে আপনি মহাবিপদে পড়তে পারেন।
৪. HDD Capasity: কেনার আগে আইফোন এর স্টোরেজ চেক করে নিবেন যে যত গিগা বিক্রেতা বলছে তত গিগা আছে কিনা। দেখা যাবে Settings > General > About ঠিকানায় গিয়ে।
৫. Exterior including Screws + Gavey SIM tray + Turbo Unlock: আইফোন এর বাইরের আবরন বা খাপটা ভালো করে দেখবেন যে বড় ধরনের কোন স্ক্রাচ বা দাগ আছে কিনা। বিশেষ করে স্ক্রু গুলো চেক করে দেখবেন যে খোলা হয়েছে কিনা। খোলা হলে স্কুর মাথায় দাগ থাকবে। আর সিম ট্রে বের করে ভালো করে দেখবেন যে ট্রের উপরে কোন ছোট সার্কিট লাগানো আছে কিনা। যদি থাকে তাহলে বুঝবেন এটা গেভে আনলক করা। ফ্যাক্টরি আনলক নয়। গেভে আনলক করা আইফোন এর দাম কম। কারন আপনার সিমের অনেক নাম্বার গেভেতে কাজ করবে না, যেমন: মোবাইলের ব্যালান্স চেক করতে পারবেন না, সবচে বড় সমস্যা হলো, একদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখবেন ফোন আবার ফ্যাক্টরি লকড হয়ে গেছে। এই সমস্যা বেশী হয় ফোনের ওএস আপডেট দেবার পর। টারবো আনলকেও এই সমস্যা হয়। অবশ্য বিক্রেতা সাধারনত আগেই বলে দিবে আপনাকে যে ফোনটা টারবো বা গেভে আনলক কিনা।
৬. iTunes Log on with my id: নিজের যদি এ্যাপেল আইডি থাকে, তবে বিক্রেতার সামনে সেটা দিয়ে লগ ইন করবেন। দরকার হলে একটা এ্যাপ নামিয়েও দেখবেন। (Battery Doctor নামে একটা ফ্রি এ্যাপ আছে। ওটা নামাতে পারেন। ওটা দিয়ে আইফোন এর ব্যাটারির ১৪ গোষ্ঠির খবর নেয়া যায়। আইফোন ফুল চার্জ হতে কত সময় নেবে এবং কত সময় ব্যাটারি ব্যাকাপ পাওয়া যাবে, সেটা এই এ্যাপের মাধ্যমে জানা যাবে।
৭. Data Syncing & charging at the same time: ভালো হয় সাথে করে একটা ল্যাপটপ নিয়ে যেতে পারলেও। তাহলে এই ফিচারটা চেক করে দেখা যায় যে আইফোনটি একইসাথে সিংক হচ্ছে আর চার্জ হচেছ কিনা। আর যদি একান্তই ল্যাপি না নিয়ে যেতে পারেন তো অন্তত পাওয়ার এডাপটার দিয়ে চার্জ করে দেখেন যে ফোন ঠিকমতো চার্জ হয় কিনা।
৮. Make a call: যে আইফোনটি কিনতে চাচ্ছেন সেখান থেকে ফোন করে কথা বলুন কারো সাথে। দেখুন মাইক্রোফোন আর সাউন্ড আউটপুট ঠিকমতো কাজ করে কিনা।
৯. Send a text: এসএমএস পাঠান।
১০. Headphone Jack: ইয়ারফোন লাগিয়ে গান শুনে দেখুন ইয়ার ফোনের জ্যাক ঠিক আছে কিনা।
১১. Audio/Video: অডিও ভিডিও প্লেব্যাক চেক করুন।
১২. Still Picture/ Movie Recording: ক্যামেরা দিয়ে স্টিল ছবি তুলুন এবং ভিডিও করে দেখুন সব কাজ করে কিনা।
১৩. Voice Memo Recording: দেখুন আপনার ভয়েস রেকর্ড করা যায় কিনা। আইফোন এ একটা বিল্ট ইন এ্যাপ থাকে এটার জন্য। নাম Voice Memo.
১৪. ফোনের IMEI নাম্বার দিয়ে ফোনের বয়স চেক করুন। এই ওয়েবসাইটে যান। এরপর যে ফোন কিনতে চান সেটার IMEI নাম্বার দিয়ে দেখুন নীচের ছবিতে দেয়া তথ্য পাবেন। প্রতিটি তথ্য খুব মনোযোগ দিয়ে পড়বেন এবং দেখবেন যে বিক্রেতার কথার সাথে সেগুলো মেলে কিনা। ফোনটি কবে কেনা হয়েছে একদম দিন তারিখসহ সব দেখতে পাবেন। IMEI নাম্বার পাওয়া যাবে Settings > General > About > নীচের দিকে IMEI নাম্বার আছে। সিম ট্রের সাথে IMEI নম্বর ম্যাচ করে কিনা চাইলে সেটাও চেক করে দেখতে পারেন। ম্যাচ না করলে ভাববেন হয় চোরাই মাল নাহলে থার্ড পার্টি ফ্যাকটরি রিফারবিশড।
১৫: Charging with wall charger: ওয়াল চার্জার দিয়ে চার্জ হয় কিনা দেখুন। অনেক আইফোন ল্যাপিতে চার্জ হয় কিন্তু ওয়াল আউটপুটে হয় না। তেমনি ভাইস ভার্সা।
আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার, ব্যাটারির শেষবার চার্জ টাইম আর বর্তমান চার্জ পার্সেনটেজ এদুটো আনুপাতিক হারে মিলিয়ে দেখবেন সব ঠিক আছে কিনা। ধরুন, ব্যাটারি ইউজ হচ্ছে ৩০ মিনিট ধরে অথচ স্ট্যান্ডবাই টাইম দেখাচ্ছে ১ ঘন্টারও কম সময়, তাহলে বুঝবেন ব্যাটারির আয়ু খুব বেশীদিন নাই। ঠিকানাঃ Settings -> General -> Usage.
১৬. লেটেস্ট ওএস আপডেট দেয়া আছে কিনা সেটা চেক করুন। অনেক সময় চোরাই মাল হলে চোর লেটেষ্ট আপডেট দিতে ভয় পায়/দিতে পারে না।
১৭. স্ক্রিনের বাইরে আংগুল দিয়ে টাচ করে দেখুন যে ডিসপ্লে ডিম হয়ে যায় কিনা। IF dim – Okay. NOT dim – Not Okay.
১৮. ওয়াই ফাই-ব্লুটুথ: এই দুইটা ফিচার কাজ করে কিনা দেখবেন। আশে পাশে ওয়াই ফাই না থাকলেও সমস্যা নাই আপনি শুধু দেখেন যে এই দুটা অন হয় কিনা। কারন iOS 7 আপডেট দেবার পর হাজার হাজার আইফোন এর ওয়াইফাই আর ব্লুটুথ ফিচার নষ্ট হয়ে গিয়েছিলো। এবং এই কারনেও অনেকে তার আইফোনটি বিক্রি করে দিতে পারে। আর বিক্রেতার জন্য সুখকর ব্যাপার হলো, বেশীরভাগ লোকই আইফোন কিনার আাগে এই দুইটা ফিচার চেক করে দেখে না। আপনি এই ভুল করবেন না।
১৯. আইফোন এর দুটো জাত আছে। GSM আর CDMA. আামর কাছে CDMA preferred. আরেকটা জাত আছে, চাইনিজ আইফোন। মানে এটা শুধুমাত্র চায়নায় বিক্রির জন্য আলাদা ভাবে এ্যাপল বানিয়ে থাকে। এইটাও কিনবেন না।
২০. পাওয়ার বাটন ঠিক মতো কাজ করে কিনা দেখবেন। অনেক সময় অতিরিক্ত ব্যবহারে পাওয়ার বাটন ঢিলা হয়ে যায় বা রেসপন্স করতে দেরী হয়।
২১. আইফোন এর পাশে যে বাটনগুলো আছে, সেগুলো ভালো করে চেক করে দেখবেন সব ঠিক ঠাক মতো কাজ করে কিনা। বিশেষ করে সাইলেন্ট বাটনটা।
২২. আইফোন এর ডেড পিক্সেলও চেক করতে পারেন হাতে সময় থাকলেঃ এইসাইটে যাবেন আইফোন দিয়ে তারপর চেক করে দেখবেন স্ত্রিনে কোন কালো ডট দেখায় কিনা। এইটা অত জরুরী কিছু না। কেননা অত্যন্ত রেয়ার কেসে আইফোন ডেড বা স্টাক (stuck) পিক্সেল থাকে।
আরেকটা কথা, আমি সব সময়ই জেলব্রোকেন ফোন কিনতে নিরুৎসাহিত করি। জেলব্রোকেনের অনেক সমস্যা সেটা নিয়ে আরেকদিন আলাদা করে টিউন দিবো।
কিভাবে বুঝবেন আইফোন জেইলব্রোকেন কিনাঃ
২১. আইফোন এ সার্চ করে দেখুন “cydia”, “Absinthe”, “winterboard” or “installous” নামে কোন এ্যাপ ইনসটল করা আছে কিনা। যদি থাকে তবে ভাববেনআইফোনটি জেলব্রেক করা। কিনবেন না। বা কিনতে চাইলেও দাম কম বলবেন।
সবশেষে কয়েকটা সাধারন টিপসঃ ক্যাশ টাকা নিয়ে যাবেন না। ব্যাংকে টাকা রেখে এটিএম কার্ড নিয়ে যান। সাথে করে কাউকে নিয়ে যান। একা না যাওয়াই ভালো। ফোনের ছবি বিজ্ঞাপনে না দিলে সেটা সন্দেহজনক। বিক্রেতা বেশী তাড়াহুড়ো করলে ভাববেন কোথাও কোন ঘাপলা আছে। আপনি সময় নিয়ে ধীরে সুস্থে দেখবেন। দরকার হলে আপনি আগে থেকে বলে নিবেন যে আমার আধা ঘন্টা সময় লাগবে আইফোন চেক করতে। বিক্রেতা যদি এতে রাজী না হয় তবে সিটিএন বলে চলে আসুন। বিক্রয়.কম বা এখানেই.কম এআইফোন হট কেকের মতো বিক্রি হয় এবং অবাক করা বাপার, বেশীরভাগই থাকে উত্তরার। এটা কেন কে জানে?
কিছু মিস গেলে জানাবেন প্লিজ। আমার এই টিপসগুলো পড়ে কেউ যদি উপকার পান বা কারো যদি কোন ফিডব্যাক থাকে তবে জানাতে দ্বিধা করবেন না, খুব খুশী হবো। ধন্যবাদ।
- See more at: http://www.bd24live.com/article/2619/index.html#sthash.zbltLjdv.dpuf

শনিবার, ২৩ আগস্ট, ২০১৪

সোমালিয়ার জেলে গুলা কেন জলদস্যু হল

সোমালিয়ার জেলে গুলা কেন জলদস্যু হল বিস্তারিত
১৯৯১ সালে সোমালিয়ায় সংঘাত শুরু হওযার পর
থেকে দেশটির কেন্দ্রে কোন শক্তিশালি সরকার
আসেনি৷ জুন ২০০৪ সালে দেশটিতে অন্তবর্তিকালীন
কোয়ালিশন সরকার গঠিক হয়। পাঁচ বছরের
মেয়াদে তাদের লক্ষ্য ছিল একটি অন্তর্বতিকালীন
সংবিধান রচনা করা। ২০০৮ সালে তারা একটি নতুন
খসড়া সংবিধান প্রনয়ন করে কিন্তু সেটা নিয়েও
প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়।
সেই বিরোধের জের ধরে প্রধানমন্ত্রী ওমর আব্দুর রশিদ
আলী শারমার্ক পদত্যাগ করেন।
গৃহযুদ্ধের কারনে ভেঙে পড়ে দেশটির অর্থনীতি।
কৃষি শিল্পসহ সমগ্র ক্ষেত্রে বিশৃঙ্খল অবস্থা সৃষ্টি হয়।
এমতবস্থায় নতুন দুর্যোগ হিসেবে শুরু হয় দুর্ভিক্ষ। দেশটির
কয়েক কোটি মানুষ ভয়াবহ দুভিক্ষে আক্রান্ত হয়। লক্ষ লক্ষ
মানুষ খাবারের আশায় আর বাচাঁর জন্য
পাশ্ববর্তি দেশে উদ্বাস্তু হয়ে পালিয়ে যেতে থাকে।
একদিকে দুভিক্ষ আর অন্যদিকে গৃহযুদ্ধের
কারনে দেশটি এক রকম নরকে পরিনত হয়। ব্যার্থ
রাষ্ট্রে পরিনত হয় সোমালিয়া।
রহস্যময় জাহাজের আনাগোনা :
এমনই জগাখিচুড়ি যখন সোমালিয়ার অভ্যান্তরিণ
পরিস্থিতি তখন সেই সুযোগে দেশটির
উপকূলে আনাগোনা শুরু হয় রহস্যময় ইউরোপীয় জাহাজের।
তারা চুরি করে সোমালিয়ার উপকূলে প্রবেশ করে,
এবং তড়িঘড়ি করে সাগরে বিরাট বিরাট ব্যারেল
ফেলেই পালিয়ে যায়। তাত্ক্ষণিকভাবে উপকূলের
অধিবাসীরা বুঝতে পারে না সেগুলোতে কি আছে।
বোঝাগেল তখনই যখন তারা অসুস্থ হতে শুরু করলো।
প্রথমে তাদের গায়ে অদ্ভুত সব দাগ দেখা দিতে শুরু করে,
তারপর শুরু হলো বমি। সবচেয়ে মারাত্তক বিষয়
হলো নারীরা বিকলাঙ্গ শিশু প্রসব করতে থাকলো।
বোঝা গেল তেজষ্ক্রিয়তার কারনে এসব হচ্ছে।
রোগাক্রান্ত হয়ে শত শত মানুষ মারা যেতে থাকলো।
২০০৫ সালের পর, সোমালিয়ার উপকূল ভরে যায় হাজার
হাজার পরিত্যক্ত ও ফুটো ব্যারেল। পানি বিষাক্ত
হওয়ার কারনে মরে যেতে থাকলো মাছ। সোমালিয়ায়
জাতিসংঘ প্রতিনিধি আহমেদু আবদাল্লাহ বলেন, ‘কেউ
আমাদের উপকূলে পারমানবিক বর্জ ফেলছে। আরও
ফেলছে সীসা, ক্যামিয়াম ও মার্কারি। নেই
সাথে বিষাক্ত রাসায়নিক উপাদান।’ প্রায় ১০ মিলিয়ন
টন বিষাক্ত রাসায়নিক দ্রব্য তাদের উপকূলে ফেলা হয়।
তদন্ত করে দেখা গেল এসব আসছে ইউরোপের হাসপাতাল,
কারখানা আর পারমানবিক চুল্লি থেকে।
এমনকি তারা বর্জ ফেলার জন্য মাফিয়াদেরও
ভাড়া করে। ইউরোপীয় সরকারগুলো এবিষয়ে নিশ্চুপ।
তারা এসব বর্জ ফেলা প্রতিরোধ করছে না, বিরতও
থাকছে না, দিচ্ছে না কোন ক্ষতিপূরণ।
একই সময়ে অন্য কিছু ইউরোপীয় দেশগুলোর জাহাজ
সোমালিয়ার সমুদ্র লুটপাট শুরু করে। সোমালিয়ার প্রধান
সম্পদ তাদের সামুদ্রিক মাছের ভাণ্ডার। সোমালিয়ার
সমূদ্র উপকূল থেকে তারা প্রতিবছর ৩০০ মিলিয়ন ডলারের
টুনা, চিংড়ি, গলদা চিংড়ি ও অন্যান্য মাছ
ধরে নিয়ে যায়।
শুরু হলো প্রতিরোধ :
সমূদ্রে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ
করে যে জেলে সম্প্রদায় তারা বুঝতে পারলো এবার
তাদের সর্বস্ব খোয়া যেতে বসেছে। মোহাম্মদ হোসেন
নামে এক যুবক বলে, ‘যদি কিছুই করা না হয়, অল্পদিনের
মধ্যেই আমাদের সমুদ্র মাছহীন
হয়ে পড়বে।’তারা ভাবলো বিছু একটা করা দরকার। তখন
তারা প্রথমে স্পিডবোট নিয়ে বর্জ্র্য ফেলা ও মাছ ধরার
জাহাজ আর ট্রলারগুলিকে তাড়িয়ে দেওয়ার
চেষ্টা করে। এভাবেও যখন পারা গেল না তখন
একপর্যায়ে তাদের ওপর ‘ট্যাক্স’ বসানোরও
চেষ্টা করে জেলেরা। কিন্তু তাতেও তাদের
ঠেকানো গেল না। এক পর্যায়ে একরকম বাধ্য হয়েই
তারা হাতে তুলে নিল অস্ত্র। মাছ চুরি করা আর বর্জ
ফেলা জাহাজগুলোকে তারা দখল করে নিতে শরু করলা।
তারা বুঝতে পারলো জাহাজগুলি দখল করা যায়। এই
সাধাসিধা জেলেরা এবার হয়ে উঠলো ‘জলদস্যু’।
তাদের এক নেতা সুগুল আলি বলেন, আমাদের উদ্দেশ্য
হলো বেআইনী মাছ ধরা এবং উপকূল পারমানবিক ও
রাসায়নিক বর্জ ফেলা বন্ধ করা।…আমরা জলদস্যু নই…ওরাই
জলদস্যু যারা আমাদের মাছ কেড়ে নেয়, যারা আমাদের
সমুদ্র বিষ দিয়ে ভরে ফেলে এবং আমাদের
পানিতে অস্ত্র নিয়ে ঘোরাফেরা করে।’
স্থানীয়দের কাছে এই ‘জলদস্যু’রা বিপুলভাবে জনপ্রিয়।
সোমালিয়ার একটি সংবাদ সংস্থার
জরিপে উঠে আসে বিস্ময়কর তথ্য। ৭০ ভাগ সোমালিয়
মনে করে ‘জলদস্যুতাই এখন তাদের সমুদ্র প্রতিরক্ষার
জাতীয় কৌশল।
দস্যু বৃত্তির সূচনা :
বর্জ ফেলা জাহাজ আটকের মধ্য দিয়ে তাদের
আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি পেল। তাদের মধ্য সুযোগ
সন্ধানী একটি অংশ কৌশল পরিবর্তন করলো। জাহাজ ও
নাবিকদের আটক করে মুক্তিপণ আদায় জলদস্যুদের বড়
কৌশল হয়ে দাঁড়ালো। এবার
তারা হয়ে উঠলো সত্যিকারের জলদস্যু। এর মধ্যে অনেক
জাহাজ আটক করে নাবিকদের জিম্মি করা হয়েছে।
সোমালিয়ার সরকার গোটা দেশের নিয়ন্ত্রণ
নিতে ইসলামী জঙ্গিদের বিরুদ্ধে লড়াই করছে।
জলদস্যুতা রোধে তারা খুবই অসহায়। গৃহযুদ্ধ আর
জঙ্গি দমনে সরকার এত বেশি ব্যাস্ত আর বিপর্যস্ত
যে জলদস্যু দমন তাদের সামর্থের বাইরে।
সেই সুযোগে সোমালিয়ার বিশাল উপকূলীয়
এলাকা জলদস্যুদের নিরাপদ আশ্রয়ে পরিণত হলো।
তারা এতটাই দুধর্ষ জলদস্যুতে পরিণত হলো যে, দুনিয়ার বড়
বড় শিপিং কোম্পানিগুলো আর সরকারের ঘুম হারাম
করে দিতে থাকলো। বিশেষ
করে যারা ব্যাবসা বানিজ্যের জন্য আরব সাগর আর
লোহীত সাগর ব্যাবহার করে তাদের জন্য। এই
রুটটি হয়ে উঠলো পৃথিবীর সবচেয়ে বিপদসঙ্কুল জলপথ।
সমুদ্র নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন,
সোমালিয়ায় মাত্র পাঁচটি জলদস্যু দল এবং তাদের
অধীনে ১২ শ’র বেশি বন্দুকধারী জলদস্যু আছে।
তারা লোহিত সাগরের দক্ষিণাংশে চলাচল
করা বিদেশী জাহাজকে ধরতে সমুদ্রে মাছ ধরা নৌযান
ব্যবহার করে। মাছ ধরা ট্রলারের
ছদ্ববেশে তারা সাগরে অবস্থান করে আর সুযোগ
বুঝে বানিজ্যিক হাজাজে হামলা করে। রাতের
বেলা বড় বড় জাহাজগুলোকে বেপরোয়াভাবে আক্রমণ
করে তারা। হেভি মেশিনগান এবং রকেট প্রপেলড
গ্রেনেড দিয়ে সূত্রপাত হয় সেই সব আক্রমণের।
এ কাজে তারা অত্যাধুনিক স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র ব্যবহার
করে। ব্যবহার করে রকেটচালিত গ্রেনেড। এছাড়াও
তারা ব্যবহার করছে মোবাইল ফোন, স্যাটেলাইট ফোন,
জিপিএস, সোলার সিস্টেম, আধুনিক স্পিডবোট, অ্যাসল্ট
রাইফেল, শটগান, গ্রেনেড লঞ্চারসহ অত্যাধুনিক সরঞ্জাম।
গভীর সাগরে মাদারশিপ এবং সেখান
থেকে পরিচালিত স্পিডবোট, ভারী যন্ত্রপাতি,
স্যাটেলাইট ইকুইপমেন্ট, এবং মুক্তিপণের জন্য
বিদেশে মধ্যস্থতাকারী নিয়ে কারবার এখন তাদের।
আন্তর্জাতিক মেরিটাইম ব্যুরোর (আইএমবি) হিসাবমতে,
২০০৬ সালে জলদস্যুদের ২৩৯টি হামলার ঘটনায় ৭৭ নাবিক
অপহৃত হয়েছেন, জিম্মি করা হয়েছে ১৮৮ জনকে। নিহত
হয়েছেন ১৫ জন। ২০০৭ সালে জলদস্যু হামলা ১০ শতাংশ
বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৬৩-তে। এর মধ্যে ৩৫ শতাংশ
হামলার ঘটনায় ব্যবহৃত হয়েছে আগ্নেয়াস্ত্র। ২০০৯ সালের
প্রথম ৯ মাসে ছিল আগের বছরের চেয়েও বেশি। এ সময়
সবচেয়ে বেশি হামলা হয়েছে এডেন সাগর ও
সোমালিয়া উপকূলে। ২০০৫ সালের
নভেম্বরে সোমালিয়া উপকূলে আক্রান্ত হয়
একটি মার্কিন ক্রুজ শিপ।
জাতিসংঘের রিপোর্ট অনুযায়ী গত বছর গালফ অব
এডেনের করিডোরে ১১১টি আক্রমণ হয়েছে, যা আগের
বছরের তুলনায় ২০০ গুণ বেশি। ইন্টারন্যাশনাল ম্যারিটাইম
ব্যুরো জানাচ্ছে যে, বিশটারও বেশি দেশের
নৌবাহিনীর যুদ্ধ জাহাজের উপস্থিতি সত্ত্বেও গালফ
অব এডেনে গত বছরে আক্রমণের
সংখ্যা হচ্ছে ৫১টি জাহাজ। প্রায় এক হাজার নাবিক
তারা জিম্মি করে রেখেছে।
জলদস্যুদের এড়িয়ে বানিজ্য
জাহাজগুলি পরিচালনা করা এক কথায় অসম্ভব। কারন
এশিয়ার দেশগুলো উইরোপের সাথে বানিজ্য
করতে চাইলে ভারত ও আরব উপসাগর দিয়ে সুয়েজ খাল
অতিক্রম করেই কেবল ভূমধ্য সাগরে পৌছানো সম্ভব। আর এই
পথে জাহাজগুলিকে সোমালিয়ার উপকূল অতিক্রম
করতেই হবে। আর একটি পথ আছে ইউরোপ থেকে পূর্ব ও
দক্ষিণ এশিয়ায় পৌছানোর ভস্কো দা গামার আবিস্কৃত
উত্তামাশা অন্তরিপ। কিন্তু এতো পথ ঘুরে বানিজ্য
করতে গেলে ব্যাবসায়ে লালবাতি জ্বলার সম্ভাবনাই
বেশি।
আর এ কারনেই জলদস্যুদের এড়ানোটা প্রচণ্ড রকমের ব্যয়বহুল
হয়ে পড়েছে শিপিং কোম্পানীগুলোর জন্য।
মোম্বাসা বন্দরের হারবার মাস্টার তালিব খামিস
বলেন যে, জলদস্যুদের এড়ানোর জন্য গালফ অব এডেন
থেকে মোম্বাসা যাওয়ার জন্য সব জাহাজকেই
অতিরিক্ত দুই দিন সময় নিতে হচ্ছে ঘুরপথে আসার জন্য।
এছাড়া এই এলাকায় চলাচলকারী জাহাজের
ইনশিওরেন্সের প্রিমিয়ামও হয়ে উঠেছে অনেক উচ্চ।
কাজেই জাতিসংঘের সশস্ত্র পাহারা ছাড়া কোন
শিপিং কর্পোরেশনকে ঝুঁকির মধ্যে পড়ে তাদের
বানিজ্যিক প্রতিষ্ঠানকে জাহাজ ভাড়া দেওয়ার জন্য
রাজি করানো কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে।
তবে এই জলদস্যু সমস্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ
হচ্ছে সোমালিয়া নিজেই। সোমালিয়ার আট মিলিয়ন
লোকের মধ্যে আড়াই মিলিয়ন লোকই সাগর
দিয়ে আসা খাদ্যের উপর নির্ভরশীল।
মোম্বাসা থেকে মোগাদিসু পর্যন্ত জাতিসংঘের
ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রামের
খাদ্যবাহী জাহাজগুলোকে ফরাসী, ডেনিশ এবং ডাচ
যুদ্ধজাহাজগুলো এসকোর্ট দিচ্ছে অনেকদিন ধরেই। কিন্তু
তা সত্ত্বেও এই সাপ্লাই লাইন সবসময়ই বিপদজনক এবং ভঙ্গুর
রয়ে গেছে। গত বছরের মে মাসে সোমালিয়ার জন্য
চিনি বয়ে নিয়ে যাওয়া জর্ডানিয়ান জাহাজ
ভিক্টোরিয়াকে মোগাদিসুর ৩৫ মাইল দূর
থেকে ছিনিয়ে নিয়ে যায় জলদস্যুরা। একসপ্তাহ
পরে ছাড়া পায় সেই জাহাজ।
‘জলদস্যু’ বানিজ্য :
সেমালিয়াতে জলদস্যুতা এখন বিশাল
বাণিজ্যে পরিণত হয়েছে। দুবাই এবং অন্যান্য
দেশে থাকা সোমালিরা বিনিয়োগ করছে এই ব্যবসায়
বিপুল পরিমাণে। সোমালি জলদস্যুদের লুট করা টাকায়
বন্দর ঈলে বিশাল বিশাল ভিলা এবং হোটেল
তৈরি হয়ে গেছে। এক সময়কার গরীব জেলেরা এখন
মার্সিডিজ বেঞ্জ হাকাচ্ছে। শুধুমাত্র ২০০৮ সালেই
সোমালিয়ান জলদস্যুরা আয় করেছে একশ পঁচিশ মিলিয়ন
ডলার। বিশাল মুনাফার কারণে সোমালিয়ার অনেক
যুদ্ধবাজ গোত্র নেতারাই সুসংগঠিত উপায়ে শুরু
করেছে জলদস্যু ব্যবসা। দলে দলে দরিদ্র
জেলে ছেলেরা জলদস্যু দলে নাম লেখানোর জন্য
উঠে পড়ে লেগেছে। এই ব্যবসার আসল
লোকজনেরা রয়েছে পর্দার অন্তরালে। অন্যসব ব্যবসার মতই
সম্মুখসারির জলদস্যুদের হাতে টাকার খুব সামান্য অংশই
যায়। বেশিরভাগ অংশটাই চলে যায় নেপথ্যের
হোমড়া চোমড়াদের কাছে।
অভিযোগ রয়েছে সোমালিয়ার সেনাবাহিনী,
কোয়ালিশন সরকারের মন্ত্রি ও নেতারা এমন কি ইউরোপ
আমেরিকার অনেক বড় বড় ব্যাবসায়ি এই লুটের টাকার
ভাগ পেয় থাকে। এছাড়াও যুদ্ধবাজ গোষ্ঠি নেতারা ও
জঙ্গি সংগঠনগুলোও টাকার ভাগ পায়।
ইউক্রেনিয়ান একটি জাহাজকে জলদস্যুরা যখন দখল
করে নেয়, তখন শিপিং কোম্পানী খুব দ্রুতই মুক্তিপণ
হিসাবে তিন মিলিয়ন ডলার দিতে রাজী হয়ে যায়।
কিন্তু, তারপরও কয়েক সপ্তাহ লেগে যায় জাহাজটির
মুক্তি পেতে। এর অন্যতম কারণ ছিল যে, এই মুক্তিপণের
টাকার ভাগ নেবার জন্য অসংখ্য লোক যুক্ত ছিল। এর
মধ্যে যেমন ছিল জলদস্যুদের নেতারা, তেমনি ছিল
যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত সোমালিয়ান সরকারের লোকজন
এবং তাদের শত্রু ইসলামী জঙ্গী সংগঠন আল-শাবাব।
জলদস্যুদের মুক্তিপণের টাকার ভাগ শাবাব পায়
সে ব্যাপারে অনেকেই দৃঢ় মত পোষণ করে থাকে।
মুক্তিপণের অর্থে দ্রুত ঝলমলে হয়ে উঠছে সোমালিয়ার
সমুদ্রপাড়ের জেলে বসতিগুলো। জলদস্যুদের
অর্থায়নে সেখানে উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে ঘটছে ব্যবসা-
বাণিজ্যের প্রসার। গড়ে উঠছে বিলাসবহুল হোটেল। আর
এই
জলদস্যুরা সেখানে রাতারাতি সেলিব্রেটি হয়ে উঠছে।
দেশটির অন্যান্য অংশ থেকেও
বিনিয়োগকারীরা সেখানে অর্থ খাটাচ্ছে।
জলদস্যুদের অন্যতম শক্ত ঘাঁটি আইল থেকে দস্যুদলের সদস্য
বশির আবদুল্লে টেলিফোনে রয়টার্সকে বলেন,
“এখানে এমন অনেক জলদস্যু আছে যারা কখনওই বন্দুক
নিয়ে সমুদ্রে যায়নি। কিন্তু দস্যুবৃত্তির
কাজে লাগানোর জন্য নৌকাসহ প্রয়োজনীয় সবকিছু
কাজে লাগিয়ে তারা কাড়িকাড়ি অর্থ বানাচ্ছে।”
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, জলদস্যুতা এখন সোমালিয়ার
অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি।
জলদস্যু দমন অভিযান :
জলদস্যুদের অত্যাচারে এক রকম অতিষ্ট হয়েই
জাতিসংঘের
নিরাপত্তা পরিষদে সর্বসম্মতিক্রমে আন্তর্জাতিক
নৌবাহিনীর জলদস্যুদের সোমালিয়ান নৌ সীমানায়
ধাওয়া করা এবং জলদস্যুদের
জাহাজগুলোকে ডুবিয়ে দেয়ার আইন পাশ করা হয়।
তবে জলদস্যুরা শুধু সোমালিয়া থেকেই তাদের কার্যক্রম
চালায় না। ইয়েমেনেও তাদের ঘাঁটি রয়েছে। এই দুই
দেশের জলদস্যুদের আবার সখ্যতা রয়েছে আফ্রিকার
হাতি ও গণ্ডারের দাঁত এবং হীরার
চোরাকারাবারিদের সাথে।
সাম্প্রতিককালে সোমালিয়া উপকূলে জলদস্যুদের
উৎপাত ব্যাপকভাবে বেড়ে যাওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের
নেতৃত্বে আফ্রিকার সাগর এলাকায় নিবিড় টহল কার্যক্রম
শুরু হয়েছে। অত্যাধুনিক অস্ত্র ও সরঞ্জাম সজ্জিত জলদস্যু
মোকাবেলায় হেলিকপ্টারসজ্জিত আন্তর্জাতিক
জাহাজ এখন টহল দিচ্ছে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে।
তবে এখন পর্যন্ত বিদেশী নৌবাহিনীর সাফল্য
হাতে গোনা। গত বছর জলদস্যুরা দখল করে নিয়েছিল
ফ্রেঞ্চ ইয়ট লা পোনান্ট, তিরিশ জন ক্রুসহ। ফ্রান্সের
প্রেসিডেন্ট নিকোলাস সারকোজি জিবুতি ভিত্তিক
ফরাসী কমান্ডোদেরকে একশনে যাওয়ার নির্দেশ দেন।
দুই মিলিয়ন ডলার মুক্তিপণ দেওয়া হয়।
জলদস্যুরা ইয়টকে মুক্ত করে দিয়ে ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। এর
একটা গ্রুপ সোমালিয়ান ডেজার্ট দিয়ে পালাচ্ছিল
জিপে করে। ফরাসী সামরিক হেলিকপ্টার
সেটাকে আক্রমণ
করে এবং জলদস্যুদেরকে আটকে ফ্রান্সে পাঠায়
বিচারের জন্য।
গত বছর নভেম্বরে গালফ অব এডেনে ভারতীয় যুদ্ধজাহাজ
আক্রমণ করে ধ্বংস করে দেয় জলদস্যুদের
একটি মাদারশিপকে।
এপ্রিল মাসে যুক্তরাষ্ট্রের নৌ বাহিনীর জাহাজ
ইউএসএস-এ হামলা চালানোর জন্য পাঁচ সোমালীয়
জলদস্যুকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। তাদেরকে যাবজ্জীবন
কারাদণ্ড দেয়া হতে পারে।
২০০৮ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নৌবাহিনী এসব
জলদস্যুদের মোকাবিলায় ‘অপারেশন আটলান্টা’ শুরু করে,
তা এখনো চলছে। পরবর্তিতে জার্মান ও ফ্যান্সের যুদ্ধ
জাহাজও এই অপারেশনে যোগ দেয়। কয়েকদিন
আগে তারা বিশ্ব খাদ্য কমসূচির
৯০টি ত্রাণবাহী জাহাজ
গন্তব্যস্থলে নিরাপদে পৌঁছে দেয়।
এর আগে মার্চ ২০০৪ সালে রাশিয়া, চীন ও ভারত
জলদস্যুদের দমনের জন্য ‘সম্মিলিত যৌথ বাহিনী’ গঠন করে।
এডেন সাগরে এই যৌথ
বাহিনী পণ্যবাহী জাহাজগুলোকে পাহারা দিয়ে
নিরাপদ আশ্রয়ে পৌছে দেয়া ও জলদস্যুদের
জাহাজে আক্রমণের কাজ করছে।
এই দুইটি বাহিনী একসাথে জলদস্যুদের দমনের জন্য কাজ
চালাচ্ছে। পাকিস্তানও জানিয়েছে তারা তাদের
নৌ বাহিনী দিয়ে ওই দুই যৌথ
বাহিনীকে সহায়তা করবে।
২০০৮ সালে চীনের একটি পণ্যবাহী জাহাজ ছিনতায়
হলে, সেটি উদ্ধারের জন্য তাদের দুইটি যুদ্ধজাহাজ
এডেন সাগরে পৌছায়। তারা জলদস্যুদের
বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে এবং জলদস্যুদের বেশ
কয়েকটি বোট ডুবিয়ে দেয়।
২০০৯ সনালে নরওয়ের নৌবাহিনীও জলদস্যুদের
বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে। তাদের আক্রমণেও বেশ
কয়েকটি বোট ডুবে যায়।
মার্চ ২০১০ সালে জলদস্যুরা একটি মার্কিন জাহাজ
ছিনতায় করে ২৭জন নাবিককে জিম্মি করে। তাদের
উদ্ধারের জন্য মার্কিন নৌবাহিনী অভিযান চালায়
এবং দুইটি বোট ডুবিয়ে দেয়।
এছাড়াও ২০০৯ সাল থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত বৃটেন, সুইডেন,
স্পেন, থায়ল্যাণ্ড, কোরিয়া, জাপান, ইতালি,
বুলগেরিয়া, কানাডাসহ প্রায় অর্ধশতটি দেশ
২৭টি অভিযান পরিচালনা করে। যার মধ্য ২০১০সালেই
পরিচালিত হয়েছে ২০টি অভিযান।
ন্যাটো ও সমুদ্রোপকূলীয় বাহিনীর সমন্বয়ে গঠিত
ইউরোপীয় ইউনিয়নের নৌবাহিনী চলতি বছর জলদস্যুদের
১২০টি হামলা ঠেকিয়েছে। ২০০৯ সালে ঠেকায় ২১টি।
ইউরোপীয় বাহিনীর হাতে চলতি বছর ৪০০ জন জলদস্যু আটক
হয়েছে। এর মধ্যে মাত্র ১৫ জনের বিচার হয়েছে।
এরপরেও ভারত মহাসাগরে বেশ কয়েকটি বাণিজ্য রুট
জলদস্যুদের হুমকির মুখে রয়েছে।
জলদস্যুরাও নতুন কৌশলে
গত তিন বছরে জলদস্যুদের বিরুদ্ধে এতগুলো অভিযান
এবং বিভিন্ন দেশের নৌবাহিনীসমূহের
টহলদারিরি কারণে যে সাফল্য জমা হয়েছিল
সাম্প্রতিক ঘটনাসমূহে তা ম্লান হয়ে যাওয়ার পথে।
কোনঠাসা জলদস্যুরা এবার নতুন কৌশল অবলম্বন করছে। যুদ্ধ
জাহাজগুলোকে এড়িয়ে যাওয়ার পাশাপাশি তাদের
অপারেশনের
ক্ষেত্রকে সরিয়ে নিয়ে গেছে আরো দক্ষিণে।
তারা হয়ে উঠেছে আগের চেয়েও অনেক
বেশি আক্রমণাত্মক এবং মরিয়া। ইন্টারন্যাশনাল
শিপিং এসোসিয়েশন বিমকো বলছে যে, এই আক্রমণ এখন
আর শুধু গালফ অব এডেনেই সীমাবদ্ধ নেই। ভারত
মহাসাগরের বিস্তির্ণ অঞ্চলে এখন
ছড়িয়ে পড়েছে জলদস্যুতা।
যেখানে নাবিকরা জানতো যে আটকা পড়লেও
জানে বেঁচে যাবে তারা মুক্তিপণ আসলেই। এখন আর
সেই নিশ্চয়তা নেই। যেহেতু জলদস্যুরা এখন প্রতিনিয়ত যুদ্ধ
জাহাজের মুখোমুখি হচ্ছে, কখনো বন্দী হচ্ছে,
কখনো বা নিহত হচ্ছে, সেহেতু তারাও এখন আগের
চেয়ে জোর খাটাচ্ছে বেশি, বেশি ভায়োলেন্ট
হচ্ছে। ফলে, তাদের জিম্মিদেরকে আরো বিপন্ন
করে তুলছে তারা।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের ডেপুটি অপারেশন কমান্ডার টমাস
আর্নস্ট বলেন, ‘সোমালিয়ার জলদস্যুদের তৎপরতা প্রসার ও
প্রভাব উভয় দিক থেকেই পুষ্ট হয়েছে। দস্যুরা তাদের
সামর্থ্য বাড়িয়েছে। বিশাল এলাকাজুড়ে তাদের
প্রভাব রয়েছে।’
সাম্প্রদিক দিনগুলোতে জলদস্যুরা তানজানিয়া ও
মাদাগাস্কারেও হামলা চালিয়েছে। সেখানে আরও
বড় জাহাজ ছিনতাই করে, বিশাল অঙ্কের মুক্তিপণ আদায়
করে। ভারত মহাসাগর ও আফ্রিকার বিস্তৃর্ণ উপকূল
জুড়ে এখন তারা ছড়িয়ে পড়েছে। সোমালিয়ার
অববাহিকা ও অ্যাডেন উপসাগরে বিদেশি সামরিক
বাহিনীর উপস্থিতি জলদস্যুদের আরও
বেপরোয়া করে তোলে।
সমাধান জলে নয় স্থলে :
সোমালিয়ার উপকূলের গালফ অব এডেন এবং ভারত
মহাসাগরের বিস্তীর্ণ এলাকায় যে জলদস্যুতা শুরু
হয়েছে তার সমাধান জলে হবে না। স্থলেই
করতে হবে এর সমাধান। শুধুমাত্র নৌবাহিনীর গুটি কয়েক
যুদ্ধজাহাজ দিয়ে এই বিশাল এলাকাকে নিরাপদ
করা কোনভাবেই সম্ভবপর নয়। স্বল্প সময়ের জন্য হয়তো সম্ভব,
কিন্তু দীর্ঘকালের জন্য সম্ভব নয়। জলদস্যুতার মূল
যেখানে সেখানে গিয়েই সমস্যার সমাধান করাটাই
হচ্ছে সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ। সোমালিয়ার
ভিতরে শক্তিশালী সরকারের
অভাবে যে অরাজকতা চলছে গত দেড় যুগ ধরে তা দূর
করতে হবে অবিলম্বেই। এজন্য প্রথমেই যেটা দরকার
তা হলো একটি শক্তিশালী সরকার এবং তার
অধীনে সেনাবাহিনী গড়ে তোলা। যুদ্ধবাজ নেতা ও
জঙ্গি দমন করা। বিদ্রোহ সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধান
করা। সর্বপরি চলমান দুভিক্ষ মোকাবেলা করা। দেশের
ভেতরে কর্মসংস্থানের ব্যাবস্থা করা। দেশের
ভিতরে স্থিতিশীলতা আসলেই জলদস্যুদের নিরাপদ আশ্রয়
আর থাকবে না।
জিহাদি জঙ্গিরাও যাতে সোমালিয়ার
সীমানা ছাড়িয়ে আশে পাশের
দেশে ছড়াতে না পারে সেদিকেও লক্ষ্য
রাখা প্রয়োজন। যেহেতু যুদ্ধবাজ নেতা এবং ইসলামিক
মৌলবাদীদের পরাজিত করার মত শক্তিশালী কোন
সশস্ত্র বাহিনী নেই সোমালিয়ায়, কাজে এর জন্য
সবচেয়ে জরুরী কাজ হচ্ছে দেশের
রাজনীতিকে পুনর্বিন্যাস করা এবং তেমন উগ্র নয় সেই সব
মৌলবাদী সংগঠনগুলোর সাথে চুক্তিতে আসা।
কাজটা খুব কঠিন সন্দেহ নেই কিন্তু অসম্ভব নয়।
তা না হলে জলের এই সমস্যা কোনদিনই মিটবে না।
তা সে যতই দাপাদাপি করা হোক না কেন উত্তাল নীল
জলে।
সোমালিয়ায় স্থিতিশীলতা ফিরে আসুক বন্ধ হোক
জলদস্যুতা এটাই আমাদের সকলের প্রত্যাশা।

শুক্রবার, ২২ আগস্ট, ২০১৪

কিডনি বাচান

একজোড়া কিডনি, একজোড়া ইউরেটার, একটি মূত্রথলি ও একটি মূত্রনালী নিয়ে রেচনতন্ত্র গঠিত হয়। রেচনতন্ত্রের শরীরের দূষিত পদার্থগুলো দেহ থেকে বের করে দিয়ে দেহকে কলুষমুক্ত করে। কিডনি এর পাশাপাশি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।
এ ছাড়া আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ আছে কিডনির। কিডনি বা রেচনতন্ত্রের কোনো রোগ দেখা দিলে জীবন হতে পারে সঙ্কটাপন্ন। কিন্তু কিছু নিয়ম মেনে চললেই কিন্তু এসব রোগ থেকে অনেকাংশে মুক্তি পাওয়া সম্ভব হয়।

প্রতিরোধ করুন ইনফেকশন : মূত্রনালীর দৈর্ঘ্য ছোট, যোনি ও পায়ুপথের খুব কাছাকাছি ও অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল মতাসম্পন্ন পুরুষের মতো প্রোস্টেটিক গ্রন্থির তরল পদার্থ নিঃসরণ না হওয়ায় মেয়েরা খুব সহজেই কিডনি ও ইউরিনারি ট্রাক্ট ইনফেকশনে আক্রান্ত হয় বেশি। তাই নারীদের বেশি সাবধান হওয়া প্রয়োজন। আর ইনফেকশন প্রতিরোধে নিচের নিয়মগুলো মেনে চলুন।

প্রস্রাব ধরে রাখবেন না : কিডনি প্রতিদিন ১৭০ লিটার করে রক্ত পরিশোধন করে। রক্ত পরিশোধনের পর প্রায় ১.৫ লিটার মূত্র আকারে দেহ থেকে বের হয়ে আসে। নাইট্রোজেনঘটিত ক্ষতিকারক বর্জ্য পদার্থগুলো মূত্রের মাধ্যমে দেহের বাইরে চলে আসে। তাই এ বর্জ্য পদার্থ যত দ্রুত সম্ভব দেহের বাইরে বের করে দেয়া দরকার। অনেকেই আছেন প্রস্রাবের প্রচণ্ড বেগ থাকার পরও প্রস্রাব না করে ধরে রাখেন। এটা কিন্তু কিডনির জন্য তিকর। তাই প্রস্রাব ধরে না রেখে প্রস্রাবের চাপ অনুভব করার সাথে সাথে তা ত্যাগের অভ্যাস করতে হবে। এতে করে কিডনি ও মূত্রথলি তির হাত থেকে রা পায়।

প্রচুর পানি পান করুন : অনেকেরই পানি পানে অনীহা দেখা যায়। এটা কিন্তু কিডনির জন্য তিকর। পানি কিডনি থেকে তিকর পদার্থ ও ব্যাকটেরিয়াকে ধুয়ে ফেলে কিডনিকে রাখে তরতাজা। ফলে কিডনি, মূত্রথলি বা মূত্রনালীর ইনফেকশনের মাত্রা কমে যায়। আবার পানি বেশি করে পান করলে ছোট আকারের পাথর শরীর থেকে আপনা-আপনি বের হয়ে যেতে সাহায্য করে। তাই কিডনিকে রা করতে প্রচুর পানি পান করুন। প্রতিদিন তিন-চার লিটার বা কমপে দুই লিটার পানি পান করুন। খুব বেশি পানি পান করবেন না। এটা কিন্তু স্বাস্থ্যের জন্য তিকর হতে পারে। আবার অনেক কিডনি রোগীকে চিকিৎসকরা নির্দিষ্ট পরিমাণ পানি পান করতে বলেন। সেসব রোগী চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া অতিরিক্ত পানি পান করবেন না।

যৌন মিলনের পর প্রস্রাবের অভ্যাস করুন : মেয়েদের মূত্রনালী যোনিপথের খুব কাছেই অবস্থান করে। তাই যৌনমিলনের সময় মহিলাদের মূত্রনালীতে ছোটখাটো ইনজুরি হয়। যোনিপথে ও মলদ্বারে প্রচুর ব্যাকটেরিয়া থাকে। ফলে খুব সহজেই মেয়েদের মূত্রনালীতে ব্যাকটেরিয়া ঢুকে পড়ে ইনফেকশন করতে পারে। হতে পারে ইউটিআই। আবার এর সঠিক চিকিৎসা না করালে এ থেকে হতে পারে কিডনির ইনফেকশন যেটা কিডনিকে অকেজো করে দিতে পারে। কিন্তু যৌন মিলনের পর প্রস্রাব করলে প্রস্রাবের সাথে ব্যাকটেরিয়াগুলো শরীরের বাইরে চলে আসায় রক্ষা পায় কিডনি।

মূত্রথলির ইনফেকশন নিয়ন্ত্রণ করুন : দীর্ঘদিন মূত্রথলি বা মূত্রনালীর ইনফেকশনের চিকিৎসা না করালে তা কিডনি ইনফেকশনের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এটা সহজে প্রতিরোধ করা যায়। প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া, তলপেট ব্যথা, প্রস্রাবের আগে ও পরে জ্বালাপোড়া, কোমর ব্যথা ও জ্বর থাকলে বুঝবেন আপনার মূত্রথলি বা মূত্রনালীর ইনফেকশন (ইউটিআই) হয়ে থাকতে পারে। বেশি করে পানি পানের পর যদি সমস্যা দূর না হয় তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। চিকিৎসকের পরামর্শমতো অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করার প্রয়োজন হতে পারে। তবে কোনোমতেই নিজে নিজে অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করা ঠিক হবে না। আর একটি ব্যাপার হলো
কোমর ব্যথা হলেই অনেকেই মনে করেন কিডনির সমস্যা হয়েছে। তারা চিন্তায় পড়ে যান। কোমর ব্যথা হলেই যে কিডনির সমস্যা হয়েছে এটা ঠিক নয়। কোমব ব্যথার সাথে যদি প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া, প্রস্রাবের আগে ও পরে তলপেটে ব্যথা, ঘনঘন প্রস্রাব হওয়া, প্রস্রাবের পর প্রস্রাব ঠিকমতো হয়নি বলে মনে হওয়া, প্রস্রাবের সাথে রক্ত যাওয়া, প্রস্রাব ঠিকমতো ধরে রাখতে না পারা ইত্যাদি নানান সমস্যা দেখা দেয় তাহলে কিডনির সমস্যা হতে পারে।

চা-কফি কম পান করুন : কেউ কেউ চা বা কফি পান করেন বেশি করে। এগুলো খুব বেশি পরিমাণে খেলে কিডনির কর্মমতা নষ্ট হতে পারে ও সেই সাথে বারবার কিডনির ইনফেকশন হতে পারে। তাই চা-কফি পানের পরিমাণ কমিয়ে দিয়ে পানি বা ফলের জুস পান করুন।

অপরিচ্ছন্ন ন্যাপকিন ব্যবহার করবেন না : সাধারণত গ্রাম-গঞ্জে মেয়েরা মাসিকের সময় পরিচ্ছন্ন ন্যাপকিনের পরিবর্তে নোংরা পুরান, ছেঁড়া কাপড়-চোপড় ব্যবহার করেন। এসব নোংরা কাপড় থেকে ব্যাকটেরিয়া খুব সহজেই মূত্রনালী দিয়ে ভেতরে ঢুকে রোগাক্রান্ত হতে পারে। তাই সব সময় পরিচ্ছন্ন ও ব্যাকটেরিয়ামুক্ত ন্যাপকিন ব্যবহার করুন।

পরিষ্কার রাখুন গুপ্তস্থান : পায়ুপথে প্রচুর ব্যাকটেরিয়া থাকে। এসব ব্যাকটেরিয়া খুব সহজেই মূত্রনালী দিয়ে ভেতরে ঢুকে কিডনির রোগ করতে পারে। তাই গুপ্তস্থান সব সময় পরিষ্কার রাখুন। টয়লেটের পর বেশি করে পানি দিয়ে গুপ্তস্থান পরিষ্কার করুন।

প্রতিরোধ করুন কিডনির পাথর : উন্নয়নশীল দেশে মূত্রথলির পাথর আবার উন্নত দেশে কিডনির পাথর হয় বেশি। উত্তর আমেরিকায় এক সমীায় দেখা গেছে, ৭০ বছর বয়সী মানুষের ১২ শতাংশ পুরুষ ও ৫ শতাংশ মহিলার কিডনিতে পাথর হয়েছে। আমাদের দেশেও কিডনিতে পাথর হওয়া লোকসংখ্যা কম নয়। একটু সচেতন হলে কিডনিতে পাথর হওয়া থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

এ জন্য ২ লিটারের বেশি পানি পান করুন, ভিটামিন-সি সমৃদ্ধ খাবার খান এটা প্রস্রাবের অম্লত্ব রা করে কিডনিতে পাথর রা করে। শাকসবজি ও ফলমূল খান বেশি করে। আমিষজাতীয় খাবার যেমন গোশত খাওয়া কমিয়ে দিন। ক্যালসিয়ামসমৃদ্ধ খাবার খান বেশি করে। ভিটামিন বি-৬ সমৃদ্ধ কলা, টমেটো, তরমুজ ইত্যাদি খান। কিন্তু শিম, বিট, কাঁচামরিচ, স্পাইন্যাচ, চকলেট, কোকো বীজের গুঁড়া বা ফল, চীনাবাদাম বা এর তেল, লবণ, প্রচুর গোশত, কোমল পানীয় ও ভিটামিন-ডি সমৃদ্ধ খাবার যেমন ডিমের কুসুম, কলিজা খাওয়া বাদ দিন। এগুলো কিডনি বা মূত্রথলিতে পাথর হতে সাহায্য করে। 
অনেকেই মনে করেন, ক্যালসিয়ামসমৃদ্ধ খাবার খেলে বুঝি পাথর বেশি হয় এটা একদম ঠিক নয়। সম্প্রতিক হার্ভার্ড মেডিক্যাল স্কুল ৯০ হাজার মহিলার ওপর জরিপ চালিয়ে দেখতে পেয়েছে যে, যেসব মহিলা বেশি পরিমাণে ক্যালসিয়ামসমৃদ্ধ খাবার খেয়েছেন তাদের কিডনিতে পাথর হয়নি বললেই চলে। তাই বলে আবার ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাবেন না। কারণ তারা আরো দেখতে পেয়েছেন যে, ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খেলে কিডনিতে পাথর হয় দ্রুত।

ওষুধ হতে সাবধান : একটু শরীর ব্যথা হলে অনেকেই ফার্মেসি থেকে ব্যথার ট্যাবলেট যেমন ডাইকোফেনাক এনে খান। এটা কিন্তু কিডনির জন্য খুবই মারাত্মক। এটা কিডনিকে অকেজো করার পাশাপাশি নানা ধরনের সমস্যা করতে পারে। ব্যথানাশক ট্যাবলেট, এসিআই ইনহিবিটর যেমন ক্যাপটোপ্রিল, এনারাপ্রিল, লিসিনোপ্রিল ইত্যাদি, কেমোথেরাপি, লেড, পেনিসিলামিন, গোল্ড, লিথিয়ামসহ আরো অনেক ওষুধ আছে যেগুলো কিডনির জন্য তিকর। তাই এসব ওষুধ চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া সেবন করবেন না।