স্কুল শেষে বাড়ী ফিরছিল অনামিকা আর তিথি। হঠাৎ অনামিকা ডাকে থমকে দাঁড়ায় দুজনে। পিছনে ফিরে ছেলেটাকে দেখে অবাক হ্য় অনামিকা। প্রতিদিন স্কুল থেকে ফেরার পথেই অনামিকা খেয়াল করে তিন রাস্তার মোড়ের চায়ের দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে তার দিকে। আজ কিনা সোজা সামনে এসে নাম ধরেই ডেকে বসল-
-জ্বী কিছু বলবেন ?
-হুম… হাতের গোলাপটা অনামিকার দিকে বারিয়ে দিয়ে বল্লো – এটা আপনার জন্য
-অনামিকার রক্ত চক্ষু, আমার জন্য ? কেন ?
-সে নাহয় পরেই বলি, আগে বলুন ঐ ডাগর চোখে এতটা রক্তস্রোত কি মানায় ?
-কি মানায় তবে ?
-দু-চারটা কাজলের আচর।
-কি হবে তাতে ?
-কাজল আর আপনার ডাগর চোখ, দুইয়ে মিলে বহমান মায়ায় ঝর্না।
-অনামিকার ঠোটের কোনায় বিদ্রুপের হাসি। সহসা যে চোখে অশ্রু আসার সাহস করেনা, দু-চারটা কাজলের আক কিভাবে সে চোখকে মায়াময় করে তুলবে?
-তবে কি আপনি নির্মম? হৃদয়হীনা ?
-জানিনা।
গোলাপটা অনামিকার হাতে গুজে দিয়েই উলটো হাটতে শুরু করলো অর্নব। একবারের জন্যও পিছু ফিরে চাইলোনা।
দুইঃ
তিন চারদিন আর সামনে আসা হয় নাই তবে চায়ের দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে ফ্যাল ফ্যাল তাকানো ঠিকই চলেছে। আজ আবার সামনে এসে দাড়ালো একহাতে একটা লাল গোলাপ অন্য হাতে কেবলই ধরানো একটা সিগারেট-
-অনামিকা দাঁড়াও
-ওহ… আবার আপনি, বলুন। এবার অবশ্য অনামিকার চোখের মাঝে রক্তের সেই স্রোতের ধারা অনুপস্থিত
-গোলাপটা তোমার জন্য
-আচ্ছা আপনি কি বলতে চান বলুনতো, ভাল-টাল বাসেন নাকি ?
-জানিনা
-আপনার হাতে দেখছি জ্বলন্ত সিগারেট। সিগারেট হাতে একটা মেয়েকে গোলাপ দিচ্ছেন, আপনার লজ্জা লাগে না ?
-না লাগেনা, সিগারেট আমার জীবনের অনেক সত্যের মাঝের একটা সত্য। যেটুকো সত্য সেটুকোই ভালবাসা, যেটুকো গোপনীয়তা পুরাটাই প্রতারনা।
-তার মানে কি দাড়াল? আমাকে ভালবাসেন ?
-জানিনা।
আবারো গোলাপটা অনামিকার হাতে গুজে দিয়েই উলটো হাটতে শুরু করলো অর্নব।
তিনঃ
এবার প্রায় পনের বিশ দিন হল অর্নব এর কোনো দেখা নেই। চায়ের দোকানের সামনেও তাকে আর দারিয়ে থাকতে দেখা যায় না। অনামিকার অবচেতন মন আসা যাওয়ার পথে প্রতিদিনই খুজে ফিরে অর্নবের ছায়া। মনের মাঝের এই অনিয়মের অর্থ অনামিকা বুঝেনা, কখনো বুঝার চেষ্ঠাও করেন। অতঃপর হঠাৎ একদিন অর্নব সামনে চলে আসে। যথারিতী হাতে লাল গোলাপ-
-কি ব্যাপার এতদিন কোথায় ছিলে ?
-তার মানে তুমি আমাকে খুজেছো…
-আমার বয়েই গেছে।
-গোলাপটা তোমার জন্য
-আচ্ছ সত্যি করে বলতো তুমি আমার কাছে কি চাও ? ভালবাসা ?
-যদি বলি তাই…
-ভালবাসার জন্য প্রতিদিন একটা মাত্র লাল গোলাপ, অনেক সস্তা হয়ে গেল না ?
-তুমি হয়তো এটাকে একটা গোলাপ ভেবে ভুল করছ, আমিতো কখনোই তোমাকে গোলাম দেইনি।
-তাহলে ?
-আমি তোমাকে একগুচ্ছ লাল গোলাপের পাপড়ি দিয়েছি
-একথায় অনামিকা অবাক দৃষ্টিতে চেয়ে থাকে, এতটা কাব্যিক উত্তরে সে বলার কিছুই খুজে পায়না। কিছুক্ষন চুপ থেকে সে বলে- কিন্তু এ পাষান হৃদয়ে প্রেম ভালবাসার কোনো স্থান নেই। কোনো মায়াই সেখানে জন্মানোর সাহস পাবে না।
-আমি জন্মাবো সেখানে ভালবাসা, তোমার একেকটা কষ্টের উপর একে দিব একেকটা ভালবাসার নীল রেখা।
-প্রমান সরূপ আমাকে প্রথম কাদাতে হবে।
-মানে ?
-এ চোখে জলের অস্তিত্বই কেবল প্রমান করতে পারে যে হৃদয়ে কারো জন্য মায়ার জন্ম হয়েছে।
-আবারো এক গুচ্ছ গোলাপের লাল পাপড়ি অনামিকার হাতে গুজে দিয়েই উলটো হাটতে শুরু করলো অর্নব।
চারঃ
তিন চার দিন হয়ে গেল আবার অর্নব উধাও। অনামিকার চোখ এবং মন দুইটাই অনেক বেশী উদ্গ্রীব। এদিক সেদিক খুজে বেড়ায় অপ্রিয় কোনো এক মানুষের পদচারনা। মনের কোনটায় অচিন এক দুশ্চিন্তার আনাগোনা। চোখের মাঝে অন্যরকম এক ছলছল জলধারা।
হঠাৎ করেই তিথীর অস্থির আগমন। সে কিছুই বলতে পারছেনা। কেবল ছলছল চোখে চেয়ে আছে অনামিকার দিকে। বারবার কিছু একটা বলতে যেয়েও থেমে যাচ্ছে সে-
-কি হয়েছে তিথী ? কিছু বলছিস না কেন? কি হয়েছে ?
-আজ সকালে…
-কি হয়েছে আজ সকালে ?
-সকালে অর্নব ভাই রাস্তা পার হবার সময়…
-রাস্ত পার হবার সময়… কি হয়েছে রাস্তা পার হবার সময় ? তুই কিছু বলছিস না কেন ? অনামিকার চোখ ছলছল করছে…
-একটা গাড়ী এসে… বলেই কেদে ফেললো তিথী। সে সময় অর্নব ভাইয়ার হাতে একটা লাল গোলাপ ছিল…
অনামিকার ছলছল চোখ গলে দু ফোটা কান্নার জল গড়িয়েই পড়লো। অনামিকা ভাবতে লাগল - তাহলে কি অর্নব আমাকে কাদিয়েই ছাড়লো? তবে কি মনের মাঝে সত্যিই কারোর জন্য ভালবাসার জন্ম হয়েছিল ? অর্নব কি সত্যিই আমাকে ভালবাসতে শিখিয়ে দিয়েছিল ?
এ কেমন অপূর্ন ভালবাসায় ভালবাসতে শিখা…
-জ্বী কিছু বলবেন ?
-হুম… হাতের গোলাপটা অনামিকার দিকে বারিয়ে দিয়ে বল্লো – এটা আপনার জন্য
-অনামিকার রক্ত চক্ষু, আমার জন্য ? কেন ?
-সে নাহয় পরেই বলি, আগে বলুন ঐ ডাগর চোখে এতটা রক্তস্রোত কি মানায় ?
-কি মানায় তবে ?
-দু-চারটা কাজলের আচর।
-কি হবে তাতে ?
-কাজল আর আপনার ডাগর চোখ, দুইয়ে মিলে বহমান মায়ায় ঝর্না।
-অনামিকার ঠোটের কোনায় বিদ্রুপের হাসি। সহসা যে চোখে অশ্রু আসার সাহস করেনা, দু-চারটা কাজলের আক কিভাবে সে চোখকে মায়াময় করে তুলবে?
-তবে কি আপনি নির্মম? হৃদয়হীনা ?
-জানিনা।
গোলাপটা অনামিকার হাতে গুজে দিয়েই উলটো হাটতে শুরু করলো অর্নব। একবারের জন্যও পিছু ফিরে চাইলোনা।
দুইঃ
তিন চারদিন আর সামনে আসা হয় নাই তবে চায়ের দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে ফ্যাল ফ্যাল তাকানো ঠিকই চলেছে। আজ আবার সামনে এসে দাড়ালো একহাতে একটা লাল গোলাপ অন্য হাতে কেবলই ধরানো একটা সিগারেট-
-অনামিকা দাঁড়াও
-ওহ… আবার আপনি, বলুন। এবার অবশ্য অনামিকার চোখের মাঝে রক্তের সেই স্রোতের ধারা অনুপস্থিত
-গোলাপটা তোমার জন্য
-আচ্ছা আপনি কি বলতে চান বলুনতো, ভাল-টাল বাসেন নাকি ?
-জানিনা
-আপনার হাতে দেখছি জ্বলন্ত সিগারেট। সিগারেট হাতে একটা মেয়েকে গোলাপ দিচ্ছেন, আপনার লজ্জা লাগে না ?
-না লাগেনা, সিগারেট আমার জীবনের অনেক সত্যের মাঝের একটা সত্য। যেটুকো সত্য সেটুকোই ভালবাসা, যেটুকো গোপনীয়তা পুরাটাই প্রতারনা।
-তার মানে কি দাড়াল? আমাকে ভালবাসেন ?
-জানিনা।
আবারো গোলাপটা অনামিকার হাতে গুজে দিয়েই উলটো হাটতে শুরু করলো অর্নব।
তিনঃ
এবার প্রায় পনের বিশ দিন হল অর্নব এর কোনো দেখা নেই। চায়ের দোকানের সামনেও তাকে আর দারিয়ে থাকতে দেখা যায় না। অনামিকার অবচেতন মন আসা যাওয়ার পথে প্রতিদিনই খুজে ফিরে অর্নবের ছায়া। মনের মাঝের এই অনিয়মের অর্থ অনামিকা বুঝেনা, কখনো বুঝার চেষ্ঠাও করেন। অতঃপর হঠাৎ একদিন অর্নব সামনে চলে আসে। যথারিতী হাতে লাল গোলাপ-
-কি ব্যাপার এতদিন কোথায় ছিলে ?
-তার মানে তুমি আমাকে খুজেছো…
-আমার বয়েই গেছে।
-গোলাপটা তোমার জন্য
-আচ্ছ সত্যি করে বলতো তুমি আমার কাছে কি চাও ? ভালবাসা ?
-যদি বলি তাই…
-ভালবাসার জন্য প্রতিদিন একটা মাত্র লাল গোলাপ, অনেক সস্তা হয়ে গেল না ?
-তুমি হয়তো এটাকে একটা গোলাপ ভেবে ভুল করছ, আমিতো কখনোই তোমাকে গোলাম দেইনি।
-তাহলে ?
-আমি তোমাকে একগুচ্ছ লাল গোলাপের পাপড়ি দিয়েছি
-একথায় অনামিকা অবাক দৃষ্টিতে চেয়ে থাকে, এতটা কাব্যিক উত্তরে সে বলার কিছুই খুজে পায়না। কিছুক্ষন চুপ থেকে সে বলে- কিন্তু এ পাষান হৃদয়ে প্রেম ভালবাসার কোনো স্থান নেই। কোনো মায়াই সেখানে জন্মানোর সাহস পাবে না।
-আমি জন্মাবো সেখানে ভালবাসা, তোমার একেকটা কষ্টের উপর একে দিব একেকটা ভালবাসার নীল রেখা।
-প্রমান সরূপ আমাকে প্রথম কাদাতে হবে।
-মানে ?
-এ চোখে জলের অস্তিত্বই কেবল প্রমান করতে পারে যে হৃদয়ে কারো জন্য মায়ার জন্ম হয়েছে।
-আবারো এক গুচ্ছ গোলাপের লাল পাপড়ি অনামিকার হাতে গুজে দিয়েই উলটো হাটতে শুরু করলো অর্নব।
চারঃ
তিন চার দিন হয়ে গেল আবার অর্নব উধাও। অনামিকার চোখ এবং মন দুইটাই অনেক বেশী উদ্গ্রীব। এদিক সেদিক খুজে বেড়ায় অপ্রিয় কোনো এক মানুষের পদচারনা। মনের কোনটায় অচিন এক দুশ্চিন্তার আনাগোনা। চোখের মাঝে অন্যরকম এক ছলছল জলধারা।
হঠাৎ করেই তিথীর অস্থির আগমন। সে কিছুই বলতে পারছেনা। কেবল ছলছল চোখে চেয়ে আছে অনামিকার দিকে। বারবার কিছু একটা বলতে যেয়েও থেমে যাচ্ছে সে-
-কি হয়েছে তিথী ? কিছু বলছিস না কেন? কি হয়েছে ?
-আজ সকালে…
-কি হয়েছে আজ সকালে ?
-সকালে অর্নব ভাই রাস্তা পার হবার সময়…
-রাস্ত পার হবার সময়… কি হয়েছে রাস্তা পার হবার সময় ? তুই কিছু বলছিস না কেন ? অনামিকার চোখ ছলছল করছে…
-একটা গাড়ী এসে… বলেই কেদে ফেললো তিথী। সে সময় অর্নব ভাইয়ার হাতে একটা লাল গোলাপ ছিল…
অনামিকার ছলছল চোখ গলে দু ফোটা কান্নার জল গড়িয়েই পড়লো। অনামিকা ভাবতে লাগল - তাহলে কি অর্নব আমাকে কাদিয়েই ছাড়লো? তবে কি মনের মাঝে সত্যিই কারোর জন্য ভালবাসার জন্ম হয়েছিল ? অর্নব কি সত্যিই আমাকে ভালবাসতে শিখিয়ে দিয়েছিল ?
এ কেমন অপূর্ন ভালবাসায় ভালবাসতে শিখা…
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন