তোমার অপেক্ষায় ,একা একা
জোকস অব দি ইয়ার |
এস এস সি পরীহ্মার শেষ হল আজ। কী মজা! মনের আনন্দে লাফাতে ইচ্ছা করছে। কোন লেখাপড়া নেই। তিন মাস শুধু ঘুরবো। সন্ধ্যাবেলাতে ঘরে ঢুকার সাথে সাথে সব মাটি করে দিয়ে মা বলল তুই তো ত...িন মাস ছুটিতে থাকবি তাই তোর জন্য একটা টিউশনি ঠিক করেছি। আমার স্কুলের ছাএ নীলের মা আমাকে বলেছিল নীলকে পড়াতে। আমার তো সময়নেই তাই তোর কথা বলেছি।
-মেজাজটা ফুস করে গরম হয়ে গেল। আমি ভাবলাম বন্ধুদের সাথে ঘুরব আর তুমি বলছ আমি টিউশনি করাতে ?
-তুই যখন কাউকে পড়াতে যাবিতখন তোর ঞ্জাণ অনেক বৃদ্ধি পাবে।
আর তুই ২৪ ঘন্টার মধ্যে তো শুধু ১ ঘন্টা পড়াবি। আর বাকী সময়তো অবসর। কথা বাড়িয়ে কোন লাভ হবে না বুঝে মায়ের অন্যায় আবদার মেনে নিয়ে জিঞ্জাস করলাম তোমার ছাত্র কিসে পড়ে ?
চতুর্থ শ্রেণীতে পড়ে......
কিছুক্ষণ খুজার পর "বিছমিল্লাহ হাউজ" নামের চার তলা বাড়ীটা খুজে পেলাম। তিন তলাতে উঠার সাথে সাথে বুক ধুর ধুর করেকাপছে। কেমন যেন একটা ভয় ভয় লাগছে। অবশেষে কলিংবেল বাজালাম। দরজা খুলল একটি সুন্দরী মেয়ে।
-কাকে চান ?
-এটা কী নীলদের বাসা ?
-হুম। কিন্তু আপনি কে ?
-নীলকে পড়ানোর জন্য আন্টি বলেছিল।
-ও আচ্ছা। ভিতরে আসুন।
-ধন্যবাদ।
-আপনি একটু বসুন। আমি নীলকে ডেকে দিচ্ছি ।
কিছুক্ষণপর নীল আর নীলের আম্মু আসল। নীলের আম্মু আমাকে দেখে বললেন তোমার নাম শরীফ না ? কেমন আছো ?
-ভালো আছি। আপনি কেমন আছেন ?
-আর ভাল থাকি কীভাবে ? নীলটা এত দুষ্টামি করে , কোন কথায় ই শুনে না , একদম পড়াশুনা করতে চায় না ।
-হাসি দিয়ে বললাম আন্টি এ বয়সে একটু আধটু শয়তানি করে। চিন্তা করবেন না। সব ঠিক হয়ে যাবে।
-ওর শয়তানির পরিমানটা একটু বেশী। আমি একটু বাহির হব আর তোমার কথা না শুনলে মার দিবে।
-ঠিক আছে আন্টি।
তার সাথে ফ্রি হওয়ার জন্য বললাম আমাকে ভাইয়া বলে ডেকো আর তুমি বলে ডেকো।
কিছুদিন পড়ানোর পর মনে হল ছেলেটা অনেক মেধাবী আর শান্ত। হঠাত্ একদিন আন্টি এসে বলল আমার বড় মেয়ের জন্য অংক আর ইংরেজীর ভাল শিক্ষক পাচ্ছি না। শিক্ষক না পাওয়া পর্যন্ত তুমি কষ্ট করে যদি একটু সময় দিতে পারতাহলে ভাল হয়।
আমি পড়ে গেলাম লজ্জ্বাতে। এভাবে মেয়ে দেখলে লজ্জ্বাতে কথা বলতে পারি না। আর আমি পড়াব কিভাবে! মুখে বললাম ঠিক আছে আন্টি....
নীলের বড় বোনের নাম মনি।
সে অষ্টম শ্রেণীতে পড়ে। আন্টির কথানুযায়ী তাদের হোমওয়ার্ক একটু বেশী করে দেয়া শুরু করায় তারা দুই জন ই আমার উপর বেশ অসন্তুষ্ট। তারা আমাকে নানা ভাবে জব্দ করার চেষ্টা করত। কোন দিন জুতালুকিয়ে রাখত, কোন দিনজুতার এক পাটি তিনতলাতে আরেক পাটি নীচতলাতে নতুবা দুই তলাতে রেখে দিত। কোন দিন আমি আসার আধা ঘন্টা পর পড়তে আসত। কোন দিন যাওয়ার পথে তিন তলা থেকে পানি ফেলে লুকিয়ে যেত। তাদের এসব কাজ দেখে নিজে নিজে মুখ চিপিয়ে হাসতাম ।
দেখতে দেখতে তিন মাস হয়ে গেল। আমি কলেজে উঠে গেলাম। কলেজে উঠার সাথে সাথে পড়ার চাপ শুরু হওয়ায় মা আমাকে প্রাইভেট পড়ানো ছেড়ে দেয়ার জন্য বলল.....
শেষ যেদিন প্রাইভেট পড়াতেগেলাম সেদিন সারাক্ষণ নীলতারা দুইজন কেমন নিঃচুপ হয়ে রইল । যাওয়ার সময় নীল বললঃ
ভাই তুমি আমাদের আর পড়াবে না!
-না। তোমরা তো অনেক দুষ্টামী করো তাই আর পড়াব না।
মনি চোখ মুছতে মুছতে পাশের রুমে চলে গেল আর নীলকেদে কেদে বলল সরি ভাইয়া। তোমার সাথে আর এমন করব না।
যা বলবে তা শুনব ।তুমি যেও না ভাইয়া।
আমি খানিকটা অবাক হয়ে গেলাম। যারা আমার কাছে নাপরার জন্য এত কিছু করল তারা ই কাদছে! তুমি তো অনেক ভাল ছেলে। আমি তো শয়তানি করে বললাম। যাই বলি কান্না কিছুতে থামছে না। কালকে আসব এই মিথ্যা কথা বলে নীলের কান্না থামিয়ে বাসাতে ফিরে আসলাম।
বাসাতে আসার কিছুক্ষণ পর একটা অপরিচিত নাম্বার থেকে মোবাইলে কল বেজে উঠল।
-হ্যালো, কে ?
-জ্বি...আমি।
-আমিটা কে ? নাম কী ?
-আমি মনি।
-মনি! কোন মনি!
-আমি আপনার স্টুডেন্ট।
-ও আচ্ছা। তুমি ! কোন দরকার ?
-আপনি কী আমাদের আর পড়াবেননা ?
-না।
-আমরা আপনাকে অনেক জ্বালিয়েছি। তাই আর পড়াবেন না ?
-এই মেয়ে কাদো কেন ? আমি এই কথা একবার ও বলছি।
-তোমরা তো অনেক ভাল। আসলেআমার ক্লাস শুরু হয়ে যাচ্ছে। তাই এখন আর পড়াতেপারব না।
-আমরা আপনার সাথে শয়তানি করতাম। শয়তানি করতে করতে যে আপনাকে অপমান করে ফেলেছি তা বুঝতে পারি নাই। Sorry, প্লিজ মাইন্ড করবেন না....
-এতে সরির কিছু নেই। আমি বুঝতে পেরেছি যে তোমরা শয়তানি করেছো। আমি তোমাদের কাজ দেখে তো আর ও মজা পেতাম। তোমরা আর কী শয়তানি করো! আমি তো আর ও বেশী করতাম।
-বুঝছি। এই শয়তানি দেখে ভয়ে পালানো শুরু করছেন। এর চেয়ে বেশী শয়তানি করলে না জানি কী করতেন!
-খ্যাক খ্যাক। জোকস অব দিইয়ার।
-আমার কথাগুলো জোকস মনে হয়ঠিক আছে সাহস থাকলে পড়াতে আসেন।
-ঠিক আছে। সময় পেলে আসব। এখন রাখো । পরে কথা হবে.....
মনি পড়া বুঝার অযুহাতে প্রায় সময় কল করত। দিনে দিনে কলের পরিমান বাড়তে থাকে। আমি মাঝে মাঝে ভাবতাম সে আমাকে এত কল করেকেন!
ভাবলাম একদিন বলব! কিন্তুতা খারাপ দেখায়। তাই আর বলা হয় নাই। দেখতে দেখতে ২টা বছর চলে গেল। আমি ইন্টার পরীক্ষা দিয়ে ফেললাম আর মনি দশম শ্রেণীতে। পরীক্ষার কারনে প্রায় ৩মাস ধরে মোবাইল বন্ধ রেখেছিলাম। মোবাইল অন করার সাথে সাথে মনির নাম্বার থেকে কল অসল।
-কী খবর ? কেমন আছো ?
-সেটা কী আপনার জানার দরকার আছে! এতদিনপর মোবাইল খুললেন কী মনে করে!
-উরে বাবা। এতো রাগ কেন! পরীক্ষার কারনে বন্ধ রেখেছিলাম।
-এজন্য ৩মাস বন্ধ রাখবেন!পরীক্ষা কেমন হল!
-এতো মোটামুটি হল।
-আমি আপনাকে একটা কথা বলব মাইন্ড করবেন না তো!
-কথা না শুনে কেমনে বলব!
-আগে কথাটা বল।
-আমার সাথে প্রেম করবেন!
-খ্যাক খ্যাক । জোকস অব দিইয়ার।
-কী ! আমি যা বলি তাই আপনারকাছে জোকস মনে হয়!
-কাদছো কেন ! সত্যি বলতে এটা সম্ভব না।
-সম্ভব নয় কেন ?
-আমি মধ্যবিও পরিবারের ছেলে।
আর তুমি অনেক ধনি পরিবারের মেয়ে। তোমার পরিবার এটা কথন ই মেনে নিবে না। রিলেশনে জড়িয়ে কষ্ট ছাড়া আর কিছু পাওয়া যাবে না।আমি আপনাকে এত কিছু জিঞ্জেস করি নাই। হা অথবা না বলেন।
-দেখ একটা কথা বলি। এসব ঘটনা ছবিতে ঘটে। শেষমেষ নায়ক নায়িকার মিল ঘটে। ছবি আর বাস্তব এক না । বুঝতে চেষ্টা করো।
-আমার যা বুঝার বুঝি গেছি ।আর কিছু বুঝাতে হবে না । ঠিক আছে । রাখি ।
এই বলে কল কেটে দিল। তারপর কল করে দেখি মোবাইল বন্ধ । এরপর অনেকবার ট্রাই করলাম। প্রতিবার ই মোবাইল বন্ধ পেলাম ।
বিকালে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিয়ে বাসাতে এসে দেখি মা বাহিরে যাচ্ছে।
-মা কোথায় যাচ্ছ ?
-মনি নাকী হাসপাতালে! তাইমনিকে দেখতে যাচ্ছি।
-মার কথা শুনে বুকের ভিতরটা কেমন যেন করে উঠল?মনি হাসপাতালে কেন ? কী হয়েছে ?
-তা তো জানি না। সে নাকী হারপিক খেয়ে বাথরুমে পড়েছিল....
নিজেকে খুব অপরাধী মনে হচ্ছিল। আমি ও যাব দেখতে.....
হাসপাতালে গিয়ে দেখি মনি এখন বিপদমুক্ত। বিছানা শোয়া সুন্দরী মেয়েটার মুখটা কেমন মলিন হয়ে আছে। সামনে যাওয়ার সাহস পেলামনা। দূর থেকে দেখে ইকান্নাতে দুই চোখ ভেসে গেল। হাসপাতালের বাথরুমেগিয়ে অনেকক্ষণ কান্না করে চোখ মুখ ধুয়ে বের হয়ে এলাম যেতে মা কিছুনা বুঝতে পারে......
৩দিন অনবরত ট্রাই করে ও মনির মোবাইল খোলা পেলাম না। ৩দিন পর মনি মোবাইল খুলল। অনেকক্ষণ ধরে কল করার পর ও কল ধরল না।
তাই মনিকে একটা মেসেজ দিয়ে বললাম বিকাল ৪টার দিকে আমি ইউরো কিংয়ে তোমার জন্য অপেক্ষা করব।
অনেকক্ষণ ধরে ইউরি কিংয়ে বসে আছি। কল দিচ্ছি ধরছে না। মনে হয় আসবে না। এই ভেবে বের হতে যাচ্ছি এমন সময় মনি আসল।
মনিকে আজকে খুব সুন্দর লাগছে।
তবে মুখটা কেমন জানি শুকিয়ে আছে।
-ডেকছেন কেন ?
-তুমি এমন একটা কাজ করলে কেন ? তোমার যদি কিছু একটাহত তাহলে কী হত ?
-ভাল ই তো হত। আমার ভাগ্য খারাপ। তাই বেঁচে গেছি।
-রাগ সামলাতে না পেরে জোরেএকটা চড় মেরে দিলাম। চড় মেরে আমি নিজে অবাক হয়েগেলাম! এসব কথা আর কোনদিনবলবা না।
-হাজার বার বলব তাতে আপনারকী!
-তাহলে আমি আর কোনদিন কথা বলব না।
-এভাবে মনে হয় কথা বলে উল্টিয়ে ধরেন। কী জন্য ডেকেছেন বলুন ?
-সব লজ্জ্বা বিসর্জন দিয়ে পকেট থেকে একগুচ্ছ লাল গোলাপ বের করে বললাম I LOVE U.
মনি কিছুক্ষণ অবাক দৃষ্টিতে ফুলটার দিকে তাকিয়ে রইল তারপর গোলাপ হাতে নিয়ে মুচকী হেসে বলল জোকস অব দি ইয়ার.........
জোকস অব দি ইয়ার |
এস এস সি পরীহ্মার শেষ হল আজ। কী মজা! মনের আনন্দে লাফাতে ইচ্ছা করছে। কোন লেখাপড়া নেই। তিন মাস শুধু ঘুরবো। সন্ধ্যাবেলাতে ঘরে ঢুকার সাথে সাথে সব মাটি করে দিয়ে মা বলল তুই তো ত...িন মাস ছুটিতে থাকবি তাই তোর জন্য একটা টিউশনি ঠিক করেছি। আমার স্কুলের ছাএ নীলের মা আমাকে বলেছিল নীলকে পড়াতে। আমার তো সময়নেই তাই তোর কথা বলেছি।
-মেজাজটা ফুস করে গরম হয়ে গেল। আমি ভাবলাম বন্ধুদের সাথে ঘুরব আর তুমি বলছ আমি টিউশনি করাতে ?
-তুই যখন কাউকে পড়াতে যাবিতখন তোর ঞ্জাণ অনেক বৃদ্ধি পাবে।
আর তুই ২৪ ঘন্টার মধ্যে তো শুধু ১ ঘন্টা পড়াবি। আর বাকী সময়তো অবসর। কথা বাড়িয়ে কোন লাভ হবে না বুঝে মায়ের অন্যায় আবদার মেনে নিয়ে জিঞ্জাস করলাম তোমার ছাত্র কিসে পড়ে ?
চতুর্থ শ্রেণীতে পড়ে......
কিছুক্ষণ খুজার পর "বিছমিল্লাহ হাউজ" নামের চার তলা বাড়ীটা খুজে পেলাম। তিন তলাতে উঠার সাথে সাথে বুক ধুর ধুর করেকাপছে। কেমন যেন একটা ভয় ভয় লাগছে। অবশেষে কলিংবেল বাজালাম। দরজা খুলল একটি সুন্দরী মেয়ে।
-কাকে চান ?
-এটা কী নীলদের বাসা ?
-হুম। কিন্তু আপনি কে ?
-নীলকে পড়ানোর জন্য আন্টি বলেছিল।
-ও আচ্ছা। ভিতরে আসুন।
-ধন্যবাদ।
-আপনি একটু বসুন। আমি নীলকে ডেকে দিচ্ছি ।
কিছুক্ষণপর নীল আর নীলের আম্মু আসল। নীলের আম্মু আমাকে দেখে বললেন তোমার নাম শরীফ না ? কেমন আছো ?
-ভালো আছি। আপনি কেমন আছেন ?
-আর ভাল থাকি কীভাবে ? নীলটা এত দুষ্টামি করে , কোন কথায় ই শুনে না , একদম পড়াশুনা করতে চায় না ।
-হাসি দিয়ে বললাম আন্টি এ বয়সে একটু আধটু শয়তানি করে। চিন্তা করবেন না। সব ঠিক হয়ে যাবে।
-ওর শয়তানির পরিমানটা একটু বেশী। আমি একটু বাহির হব আর তোমার কথা না শুনলে মার দিবে।
-ঠিক আছে আন্টি।
তার সাথে ফ্রি হওয়ার জন্য বললাম আমাকে ভাইয়া বলে ডেকো আর তুমি বলে ডেকো।
কিছুদিন পড়ানোর পর মনে হল ছেলেটা অনেক মেধাবী আর শান্ত। হঠাত্ একদিন আন্টি এসে বলল আমার বড় মেয়ের জন্য অংক আর ইংরেজীর ভাল শিক্ষক পাচ্ছি না। শিক্ষক না পাওয়া পর্যন্ত তুমি কষ্ট করে যদি একটু সময় দিতে পারতাহলে ভাল হয়।
আমি পড়ে গেলাম লজ্জ্বাতে। এভাবে মেয়ে দেখলে লজ্জ্বাতে কথা বলতে পারি না। আর আমি পড়াব কিভাবে! মুখে বললাম ঠিক আছে আন্টি....
নীলের বড় বোনের নাম মনি।
সে অষ্টম শ্রেণীতে পড়ে। আন্টির কথানুযায়ী তাদের হোমওয়ার্ক একটু বেশী করে দেয়া শুরু করায় তারা দুই জন ই আমার উপর বেশ অসন্তুষ্ট। তারা আমাকে নানা ভাবে জব্দ করার চেষ্টা করত। কোন দিন জুতালুকিয়ে রাখত, কোন দিনজুতার এক পাটি তিনতলাতে আরেক পাটি নীচতলাতে নতুবা দুই তলাতে রেখে দিত। কোন দিন আমি আসার আধা ঘন্টা পর পড়তে আসত। কোন দিন যাওয়ার পথে তিন তলা থেকে পানি ফেলে লুকিয়ে যেত। তাদের এসব কাজ দেখে নিজে নিজে মুখ চিপিয়ে হাসতাম ।
দেখতে দেখতে তিন মাস হয়ে গেল। আমি কলেজে উঠে গেলাম। কলেজে উঠার সাথে সাথে পড়ার চাপ শুরু হওয়ায় মা আমাকে প্রাইভেট পড়ানো ছেড়ে দেয়ার জন্য বলল.....
শেষ যেদিন প্রাইভেট পড়াতেগেলাম সেদিন সারাক্ষণ নীলতারা দুইজন কেমন নিঃচুপ হয়ে রইল । যাওয়ার সময় নীল বললঃ
ভাই তুমি আমাদের আর পড়াবে না!
-না। তোমরা তো অনেক দুষ্টামী করো তাই আর পড়াব না।
মনি চোখ মুছতে মুছতে পাশের রুমে চলে গেল আর নীলকেদে কেদে বলল সরি ভাইয়া। তোমার সাথে আর এমন করব না।
যা বলবে তা শুনব ।তুমি যেও না ভাইয়া।
আমি খানিকটা অবাক হয়ে গেলাম। যারা আমার কাছে নাপরার জন্য এত কিছু করল তারা ই কাদছে! তুমি তো অনেক ভাল ছেলে। আমি তো শয়তানি করে বললাম। যাই বলি কান্না কিছুতে থামছে না। কালকে আসব এই মিথ্যা কথা বলে নীলের কান্না থামিয়ে বাসাতে ফিরে আসলাম।
বাসাতে আসার কিছুক্ষণ পর একটা অপরিচিত নাম্বার থেকে মোবাইলে কল বেজে উঠল।
-হ্যালো, কে ?
-জ্বি...আমি।
-আমিটা কে ? নাম কী ?
-আমি মনি।
-মনি! কোন মনি!
-আমি আপনার স্টুডেন্ট।
-ও আচ্ছা। তুমি ! কোন দরকার ?
-আপনি কী আমাদের আর পড়াবেননা ?
-না।
-আমরা আপনাকে অনেক জ্বালিয়েছি। তাই আর পড়াবেন না ?
-এই মেয়ে কাদো কেন ? আমি এই কথা একবার ও বলছি।
-তোমরা তো অনেক ভাল। আসলেআমার ক্লাস শুরু হয়ে যাচ্ছে। তাই এখন আর পড়াতেপারব না।
-আমরা আপনার সাথে শয়তানি করতাম। শয়তানি করতে করতে যে আপনাকে অপমান করে ফেলেছি তা বুঝতে পারি নাই। Sorry, প্লিজ মাইন্ড করবেন না....
-এতে সরির কিছু নেই। আমি বুঝতে পেরেছি যে তোমরা শয়তানি করেছো। আমি তোমাদের কাজ দেখে তো আর ও মজা পেতাম। তোমরা আর কী শয়তানি করো! আমি তো আর ও বেশী করতাম।
-বুঝছি। এই শয়তানি দেখে ভয়ে পালানো শুরু করছেন। এর চেয়ে বেশী শয়তানি করলে না জানি কী করতেন!
-খ্যাক খ্যাক। জোকস অব দিইয়ার।
-আমার কথাগুলো জোকস মনে হয়ঠিক আছে সাহস থাকলে পড়াতে আসেন।
-ঠিক আছে। সময় পেলে আসব। এখন রাখো । পরে কথা হবে.....
মনি পড়া বুঝার অযুহাতে প্রায় সময় কল করত। দিনে দিনে কলের পরিমান বাড়তে থাকে। আমি মাঝে মাঝে ভাবতাম সে আমাকে এত কল করেকেন!
ভাবলাম একদিন বলব! কিন্তুতা খারাপ দেখায়। তাই আর বলা হয় নাই। দেখতে দেখতে ২টা বছর চলে গেল। আমি ইন্টার পরীক্ষা দিয়ে ফেললাম আর মনি দশম শ্রেণীতে। পরীক্ষার কারনে প্রায় ৩মাস ধরে মোবাইল বন্ধ রেখেছিলাম। মোবাইল অন করার সাথে সাথে মনির নাম্বার থেকে কল অসল।
-কী খবর ? কেমন আছো ?
-সেটা কী আপনার জানার দরকার আছে! এতদিনপর মোবাইল খুললেন কী মনে করে!
-উরে বাবা। এতো রাগ কেন! পরীক্ষার কারনে বন্ধ রেখেছিলাম।
-এজন্য ৩মাস বন্ধ রাখবেন!পরীক্ষা কেমন হল!
-এতো মোটামুটি হল।
-আমি আপনাকে একটা কথা বলব মাইন্ড করবেন না তো!
-কথা না শুনে কেমনে বলব!
-আগে কথাটা বল।
-আমার সাথে প্রেম করবেন!
-খ্যাক খ্যাক । জোকস অব দিইয়ার।
-কী ! আমি যা বলি তাই আপনারকাছে জোকস মনে হয়!
-কাদছো কেন ! সত্যি বলতে এটা সম্ভব না।
-সম্ভব নয় কেন ?
-আমি মধ্যবিও পরিবারের ছেলে।
আর তুমি অনেক ধনি পরিবারের মেয়ে। তোমার পরিবার এটা কথন ই মেনে নিবে না। রিলেশনে জড়িয়ে কষ্ট ছাড়া আর কিছু পাওয়া যাবে না।আমি আপনাকে এত কিছু জিঞ্জেস করি নাই। হা অথবা না বলেন।
-দেখ একটা কথা বলি। এসব ঘটনা ছবিতে ঘটে। শেষমেষ নায়ক নায়িকার মিল ঘটে। ছবি আর বাস্তব এক না । বুঝতে চেষ্টা করো।
-আমার যা বুঝার বুঝি গেছি ।আর কিছু বুঝাতে হবে না । ঠিক আছে । রাখি ।
এই বলে কল কেটে দিল। তারপর কল করে দেখি মোবাইল বন্ধ । এরপর অনেকবার ট্রাই করলাম। প্রতিবার ই মোবাইল বন্ধ পেলাম ।
বিকালে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিয়ে বাসাতে এসে দেখি মা বাহিরে যাচ্ছে।
-মা কোথায় যাচ্ছ ?
-মনি নাকী হাসপাতালে! তাইমনিকে দেখতে যাচ্ছি।
-মার কথা শুনে বুকের ভিতরটা কেমন যেন করে উঠল?মনি হাসপাতালে কেন ? কী হয়েছে ?
-তা তো জানি না। সে নাকী হারপিক খেয়ে বাথরুমে পড়েছিল....
নিজেকে খুব অপরাধী মনে হচ্ছিল। আমি ও যাব দেখতে.....
হাসপাতালে গিয়ে দেখি মনি এখন বিপদমুক্ত। বিছানা শোয়া সুন্দরী মেয়েটার মুখটা কেমন মলিন হয়ে আছে। সামনে যাওয়ার সাহস পেলামনা। দূর থেকে দেখে ইকান্নাতে দুই চোখ ভেসে গেল। হাসপাতালের বাথরুমেগিয়ে অনেকক্ষণ কান্না করে চোখ মুখ ধুয়ে বের হয়ে এলাম যেতে মা কিছুনা বুঝতে পারে......
৩দিন অনবরত ট্রাই করে ও মনির মোবাইল খোলা পেলাম না। ৩দিন পর মনি মোবাইল খুলল। অনেকক্ষণ ধরে কল করার পর ও কল ধরল না।
তাই মনিকে একটা মেসেজ দিয়ে বললাম বিকাল ৪টার দিকে আমি ইউরো কিংয়ে তোমার জন্য অপেক্ষা করব।
অনেকক্ষণ ধরে ইউরি কিংয়ে বসে আছি। কল দিচ্ছি ধরছে না। মনে হয় আসবে না। এই ভেবে বের হতে যাচ্ছি এমন সময় মনি আসল।
মনিকে আজকে খুব সুন্দর লাগছে।
তবে মুখটা কেমন জানি শুকিয়ে আছে।
-ডেকছেন কেন ?
-তুমি এমন একটা কাজ করলে কেন ? তোমার যদি কিছু একটাহত তাহলে কী হত ?
-ভাল ই তো হত। আমার ভাগ্য খারাপ। তাই বেঁচে গেছি।
-রাগ সামলাতে না পেরে জোরেএকটা চড় মেরে দিলাম। চড় মেরে আমি নিজে অবাক হয়েগেলাম! এসব কথা আর কোনদিনবলবা না।
-হাজার বার বলব তাতে আপনারকী!
-তাহলে আমি আর কোনদিন কথা বলব না।
-এভাবে মনে হয় কথা বলে উল্টিয়ে ধরেন। কী জন্য ডেকেছেন বলুন ?
-সব লজ্জ্বা বিসর্জন দিয়ে পকেট থেকে একগুচ্ছ লাল গোলাপ বের করে বললাম I LOVE U.
মনি কিছুক্ষণ অবাক দৃষ্টিতে ফুলটার দিকে তাকিয়ে রইল তারপর গোলাপ হাতে নিয়ে মুচকী হেসে বলল জোকস অব দি ইয়ার.........

কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন