গভীর রাত। সমস্ত শহরের লোক ঘুমে বিভোর। এমন কি হয়তো তুমিও। কিন্তু শত চেষ্টা করেও ঘুমাতে পারছিনা আমি। শুধু তোমার কথা মনে পড়ছে। যতবার ভেবেছি, অতীতকে আর মনে রাখব না, মুছে যাক মনের পাতা থেকে অতীতের সব বস্তা পঁচা স্মৃতিগুলো। চোখের পানি দিয়ে মুছে পরিস্কার করে ফেলব। কিন্তু অতীতকে ফেলে নিজকে আরো বিভ্রান্ত করে হারিয়ে ফেলেছি।
জানি, মানুষের জীবনের সকল আশা-আকাঙ্খা, সাধ-স্বপ্নের যখন মৃত্যু ঘটে তখন শুধু বিগত... দিনের স্মৃতিগুলোকে আকড়ে ধরে বেঁচে থাকা যায় না।স্মৃতির মধ্যে সুখ নাই, শান্তনা নেই। আছে শুধু ব্যথা, বেদনা আর দীর্ঘশ্বাস। স্মৃতি, সেতো অতীত। সুখের হোক আর দুঃখের হোক, বর্তমানে তার উপস্থিতি দুঃখজনক। শুধু আমি কেন, পৃথিবীর যে কোন মানুষ যে কোন মুহুর্তে একবার যদি অতীতের সকল সাগর মন্থর করে তাহলে তার ভেতরে একটু না একটু বেদনার উদ্রেক হবেই। যাকে চেয়েছিলাম তাকে পাইনি, যা আশা করেছিলাম তা হয়নি। যা স্বপ্নে দেখেছিলাম তা স্বপ্নরাজ্যেও বেশীদিন স্থায়ী হতে পারেনি। কঠিন বাস্তবতার সুকঠিন নিষ্পেষনে তা কুড়িতেই ঝরে পড়ে ধুলির সাথে মিশে গিয়েছে। তার স্মৃতিও মুছে গেছে পৃথিবী থেকে।
কিন্তু যাকে নিয়ে আমি স্বপ্ন দেখেছিলাম, সেতো আজ পর্যন্ত আমার মনের পাতা থেকে মুছে যেতে পারেনি। তার সেই মুখ, সেই চোখ, সেই দেহ, সেই রুপ সবই আমার মনের গহ্বরে ছবির মত স্পষ্ট হয়ে জেগে আছে। হ্যাঁ, আয়নার মতই তার মুখখানি ভাসছে আমার চোখের সামনে স্পষ্ট থেকে স্পষ্টতর হয়ে ভাসছে। কিন্তু তার সেই রুপ দেখেই তাকে আমি ভালবাসিনি, ভালবেসেছিলাম তার ভালবাসা পেয়ে।সে বুঝি সত্যিই আমাকে ভালবেসেছিল। বুঝি গভীর ভাবেই বেসেছিল। হয়তো তাই বিদায়ের দিনে তার চোখে আমি অশ্রু দেখেছিলাম।
”তুমি দৃঃখ পেলে আমি সুখী হব
একথা ভাবলে কি করে -
রাত জেগে জেগে বসে থাকি একা
দুটি চোখে জল শুধু ঝরে।”
প্রিয়া হল বসন্ত ঋতু।গভীর তার রহস্য, মধুর তার মায়ামন্ত্র, তার চাঞ্চল্য রক্তে তুলে তরঙ্গ, পৌছায় চিত্তের সেই মনিকোঠায়, যেখানে সোনার বীনায় একটি তার রয়েছে নীরবে ঝংকারের অপেক্ষায়, যে ঝংকারে বেজে বেজে উঠে সর্ব দেহে মনে অনির্বচনীয়ের বানী। আমার জীরনের মাঝখানটিতে ছিল এতকাল তোমাকে না জানার একটা প্রকান্ড কালো গর্ত। ঐখানটা ছিল সব চেয়ে কুশ্রী।আজ সেটা কানা ছাপিয়ে ভরে উঠল তারই উপরে আলো ঝলমল করে,সমস্ত আকাশের ছায়া পড়ে, আজ সেই খানটাই হয়েছে সব চেয়ে সুন্দর। এই যে আমি ক্রমাগত কথা বলে যাচ্ছি, এ হচ্ছে ঐ পরিপূর্ণ প্রান সরোবরের তরঙ্গধ্বনি; একে থামায় এমন কোন শক্তি নেই পৃথিবীতে। তাইতো কবি বলেছেন……….
পূর্ণপ্রানে চাবার যাহা
রিক্ত হস্তে চাসনে তারে;
সিক্ত চোখে যাসনে দ্বারে।
মানুষের মৃত্যুর পর তার জীবনী লেখা হয়। তার কারন, একদিকে সংসারে সে মরে, আর একদিকে মানুষের মনে সে নিবিড় করে বেঁচে উঠে। তাইতো ঐশ্বর্য দিয়েই ঐশ্বর্য দাবী করতে হয়, আর অভাব দিয়ে চাই আর্শীবাদ। জীবনের অনেকগুলো বছর পেরিয়ে যখন দেখি পেছনের দিন গুলো ধুসর ধুসর, আর সেই ধুসরতার শরীর থেকে হঠাৎ হঠাৎ কোনও ভুলে যাওয়া স্বপ্ন এসে আচমকা সামনে দাঁড়ায় বা কোনও স্মৃতি টুপ করে ঢুকে পড়ে আসার একাকী নির্জন ঘরে, আমাকে কাঁপায়, আমাকে কাঁদায়, আমাকে টেনে নিয়ে যায় সেইসব দিনগুলোর দিকে – তখন কি আমি না হেটে পারি জীবনের সেই অরিগলির অন্ধকার সরিয়ে সরিয়ে কিছু শীতার্ত স্মৃতি কুড়িয়ে আনতে! কী লাভ এনে! যা গেছে তো গেছেই। যে স্বপ্নগুলো অনেককাল মৃত, যে স্বপ্নগুলোকে এখন আর স্বপ্ন বলে চেনা যায় না, মাকড়শার জাল সরিয়ে ধুলোর আস্তর ভেঙ্গে কী লাভ সেগুলোকে নরম আঙ্গুলে তুলে এনে! যা গেছে, তা তো গেছেই।
জানি সব, তবুও আমার প্রবাস জীবন আমাকে বারবার পেছনে ফিরিয়েছে, আমি আমার অতীত জুড়ে মোহগ্রস্থের মতো হেঁটেছি। দুঃস্বপ্নের রাতের মতো এক একটি রাত আমাকে ঘোর বিষাদে আচ্ছন্ন করে রেখেছে। সমাজের সাত রকম সংস্কারের ধার ধারেনি, বারবার পতনই আমকে দাঁড়াতে শিখিয়েছে, বারবার হোঁচট খাওয়াই আমাকে হাঁটতে শিখিয়েছে, বারবার পথ হারানোই আমাকে পথ খুঁজে দিয়েছে, ধীরে ধীরে নিজের ভিতরে যে নতুন একটি বোধ আর বিশ্বাসকে জন্ম নিতে দেখেছ, তা হলো, আমার নিজের জীবনটি কেবল আমারই, অন্য কারো নয়। এই জীবনটির কর্তৃত্ব করার অধিকার কেবল আমারই। তার পরও বলতে ইচ্ছে করে………….
তুমি নেই সবকিছু তাই এক অন্তর্ভেদী শূন্যতার একান্ত প্রতীক।
যেন তুমি নেই বলে ইহ পরকালে কখনো কিছুই থাকবে না -
বর্তমান ভবিষ্যৎ এবং অতীত।
ভরে যাবে যেন এক শব্দহীনতার অসহ্য সংগীত।
তুমি নেই বলে, জ্বলবে না আলো, উড়বে না পাখি…….
দিঘির কালো জলে পুষ্পিত হবে না সেই রক্তমাখা পদ্মের শরীর
বিরহ ভিষন খেলা অন্তর্ভেদী রক্ত মাংস এবং বধির।
যেন এক দীর্ঘ হাহাকার মৃত্যুর অধিক যেন অবিরাম ক্ষুধা সর্বগ্রাসী
নিষ্ঠুর থাবার নিচে যেন এক সম্পন্ন বসুধা -
লন্ডভন্ড পড়ে আছে পত্র পুষ্পহীন।
ধরিত্রীর যত শ্যামলিমা নিমিষে উধাও।
ভষ্মিভূত প্রান্তরের যেন কোন সীমা পরিসীমা নেই।
যেন সব কিছু বিবর্ন বিস্বাদ।
এক যন্ত্রনার ক্রমাগত ছায়া প্রসারিত জীবনে মরনে।
বিরহ নিশ্চল এক অন্তরীক্ষ তার গতিময় কায়া।
তুমি নেই বলে………..
কাল মহাকাল জ্বলে ছারখার প্রতিদিন নিজেরী অনলে।আরো দেখুন
জানি, মানুষের জীবনের সকল আশা-আকাঙ্খা, সাধ-স্বপ্নের যখন মৃত্যু ঘটে তখন শুধু বিগত... দিনের স্মৃতিগুলোকে আকড়ে ধরে বেঁচে থাকা যায় না।স্মৃতির মধ্যে সুখ নাই, শান্তনা নেই। আছে শুধু ব্যথা, বেদনা আর দীর্ঘশ্বাস। স্মৃতি, সেতো অতীত। সুখের হোক আর দুঃখের হোক, বর্তমানে তার উপস্থিতি দুঃখজনক। শুধু আমি কেন, পৃথিবীর যে কোন মানুষ যে কোন মুহুর্তে একবার যদি অতীতের সকল সাগর মন্থর করে তাহলে তার ভেতরে একটু না একটু বেদনার উদ্রেক হবেই। যাকে চেয়েছিলাম তাকে পাইনি, যা আশা করেছিলাম তা হয়নি। যা স্বপ্নে দেখেছিলাম তা স্বপ্নরাজ্যেও বেশীদিন স্থায়ী হতে পারেনি। কঠিন বাস্তবতার সুকঠিন নিষ্পেষনে তা কুড়িতেই ঝরে পড়ে ধুলির সাথে মিশে গিয়েছে। তার স্মৃতিও মুছে গেছে পৃথিবী থেকে।
কিন্তু যাকে নিয়ে আমি স্বপ্ন দেখেছিলাম, সেতো আজ পর্যন্ত আমার মনের পাতা থেকে মুছে যেতে পারেনি। তার সেই মুখ, সেই চোখ, সেই দেহ, সেই রুপ সবই আমার মনের গহ্বরে ছবির মত স্পষ্ট হয়ে জেগে আছে। হ্যাঁ, আয়নার মতই তার মুখখানি ভাসছে আমার চোখের সামনে স্পষ্ট থেকে স্পষ্টতর হয়ে ভাসছে। কিন্তু তার সেই রুপ দেখেই তাকে আমি ভালবাসিনি, ভালবেসেছিলাম তার ভালবাসা পেয়ে।সে বুঝি সত্যিই আমাকে ভালবেসেছিল। বুঝি গভীর ভাবেই বেসেছিল। হয়তো তাই বিদায়ের দিনে তার চোখে আমি অশ্রু দেখেছিলাম।
”তুমি দৃঃখ পেলে আমি সুখী হব
একথা ভাবলে কি করে -
রাত জেগে জেগে বসে থাকি একা
দুটি চোখে জল শুধু ঝরে।”
প্রিয়া হল বসন্ত ঋতু।গভীর তার রহস্য, মধুর তার মায়ামন্ত্র, তার চাঞ্চল্য রক্তে তুলে তরঙ্গ, পৌছায় চিত্তের সেই মনিকোঠায়, যেখানে সোনার বীনায় একটি তার রয়েছে নীরবে ঝংকারের অপেক্ষায়, যে ঝংকারে বেজে বেজে উঠে সর্ব দেহে মনে অনির্বচনীয়ের বানী। আমার জীরনের মাঝখানটিতে ছিল এতকাল তোমাকে না জানার একটা প্রকান্ড কালো গর্ত। ঐখানটা ছিল সব চেয়ে কুশ্রী।আজ সেটা কানা ছাপিয়ে ভরে উঠল তারই উপরে আলো ঝলমল করে,সমস্ত আকাশের ছায়া পড়ে, আজ সেই খানটাই হয়েছে সব চেয়ে সুন্দর। এই যে আমি ক্রমাগত কথা বলে যাচ্ছি, এ হচ্ছে ঐ পরিপূর্ণ প্রান সরোবরের তরঙ্গধ্বনি; একে থামায় এমন কোন শক্তি নেই পৃথিবীতে। তাইতো কবি বলেছেন……….
পূর্ণপ্রানে চাবার যাহা
রিক্ত হস্তে চাসনে তারে;
সিক্ত চোখে যাসনে দ্বারে।
মানুষের মৃত্যুর পর তার জীবনী লেখা হয়। তার কারন, একদিকে সংসারে সে মরে, আর একদিকে মানুষের মনে সে নিবিড় করে বেঁচে উঠে। তাইতো ঐশ্বর্য দিয়েই ঐশ্বর্য দাবী করতে হয়, আর অভাব দিয়ে চাই আর্শীবাদ। জীবনের অনেকগুলো বছর পেরিয়ে যখন দেখি পেছনের দিন গুলো ধুসর ধুসর, আর সেই ধুসরতার শরীর থেকে হঠাৎ হঠাৎ কোনও ভুলে যাওয়া স্বপ্ন এসে আচমকা সামনে দাঁড়ায় বা কোনও স্মৃতি টুপ করে ঢুকে পড়ে আসার একাকী নির্জন ঘরে, আমাকে কাঁপায়, আমাকে কাঁদায়, আমাকে টেনে নিয়ে যায় সেইসব দিনগুলোর দিকে – তখন কি আমি না হেটে পারি জীবনের সেই অরিগলির অন্ধকার সরিয়ে সরিয়ে কিছু শীতার্ত স্মৃতি কুড়িয়ে আনতে! কী লাভ এনে! যা গেছে তো গেছেই। যে স্বপ্নগুলো অনেককাল মৃত, যে স্বপ্নগুলোকে এখন আর স্বপ্ন বলে চেনা যায় না, মাকড়শার জাল সরিয়ে ধুলোর আস্তর ভেঙ্গে কী লাভ সেগুলোকে নরম আঙ্গুলে তুলে এনে! যা গেছে, তা তো গেছেই।
জানি সব, তবুও আমার প্রবাস জীবন আমাকে বারবার পেছনে ফিরিয়েছে, আমি আমার অতীত জুড়ে মোহগ্রস্থের মতো হেঁটেছি। দুঃস্বপ্নের রাতের মতো এক একটি রাত আমাকে ঘোর বিষাদে আচ্ছন্ন করে রেখেছে। সমাজের সাত রকম সংস্কারের ধার ধারেনি, বারবার পতনই আমকে দাঁড়াতে শিখিয়েছে, বারবার হোঁচট খাওয়াই আমাকে হাঁটতে শিখিয়েছে, বারবার পথ হারানোই আমাকে পথ খুঁজে দিয়েছে, ধীরে ধীরে নিজের ভিতরে যে নতুন একটি বোধ আর বিশ্বাসকে জন্ম নিতে দেখেছ, তা হলো, আমার নিজের জীবনটি কেবল আমারই, অন্য কারো নয়। এই জীবনটির কর্তৃত্ব করার অধিকার কেবল আমারই। তার পরও বলতে ইচ্ছে করে………….
তুমি নেই সবকিছু তাই এক অন্তর্ভেদী শূন্যতার একান্ত প্রতীক।
যেন তুমি নেই বলে ইহ পরকালে কখনো কিছুই থাকবে না -
বর্তমান ভবিষ্যৎ এবং অতীত।
ভরে যাবে যেন এক শব্দহীনতার অসহ্য সংগীত।
তুমি নেই বলে, জ্বলবে না আলো, উড়বে না পাখি…….
দিঘির কালো জলে পুষ্পিত হবে না সেই রক্তমাখা পদ্মের শরীর
বিরহ ভিষন খেলা অন্তর্ভেদী রক্ত মাংস এবং বধির।
যেন এক দীর্ঘ হাহাকার মৃত্যুর অধিক যেন অবিরাম ক্ষুধা সর্বগ্রাসী
নিষ্ঠুর থাবার নিচে যেন এক সম্পন্ন বসুধা -
লন্ডভন্ড পড়ে আছে পত্র পুষ্পহীন।
ধরিত্রীর যত শ্যামলিমা নিমিষে উধাও।
ভষ্মিভূত প্রান্তরের যেন কোন সীমা পরিসীমা নেই।
যেন সব কিছু বিবর্ন বিস্বাদ।
এক যন্ত্রনার ক্রমাগত ছায়া প্রসারিত জীবনে মরনে।
বিরহ নিশ্চল এক অন্তরীক্ষ তার গতিময় কায়া।
তুমি নেই বলে………..
কাল মহাকাল জ্বলে ছারখার প্রতিদিন নিজেরী অনলে।আরো দেখুন

কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন